বাংলার কন্ঠস্বরঃ চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ হিসেবে খ্যাত কর্ণফুলী নদীর ২ হাজার ১৭২ অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। তারা কর্ণফুলী নদীকে ইচ্ছামতো ভরাট ও দখল করেছেন। তৈরি করেছেন সেমিপাকা ঘর, দালান, গোডাউন, কারখানা ও বস্তি। তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আজ সকালে সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় নদীরক্ষা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জানা যায়, আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর সীমানা নির্ধারণ, নাব্য, স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা ও দূষণ রোধের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটি গত বছরের ১৮ জুন আরএস ও বিএস রেকর্ড অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর বর্তমান অবস্থান এবং দখলদারদের চিহ্নিতকরণসংবলিত ম্যাপের পাশাপাশি অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে। গত বছরের ১১ আগস্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনে আরএস রেকর্ডমূলে কর্ণফুলী নদীর বাকলিয়া ও পূর্ব পতেঙ্গা মৌজায় ২ হাজার ১১২ এবং বিএস রেকর্ডমূলে বাকলিয়া, মাদারবাড়ী, গোসাইলডাঙ্গা, মনোহরখালী, ফিরিঙ্গিবাজার মৌজায় ৬০ অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করা হয়। তারা নদীর তীরে সেমিপাকা ঘর, দালান, গোডাউন, কারখানা ও বস্তি নির্মাণ করেছেন। জেলা প্রশাসনের ডেপুটি রেভিনিউ কালেক্টর মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, শনিবার বিভাগীয় নদীরক্ষা কমিটির বৈঠক হবে। বৈঠকে অবৈধভাবে দখলদারদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কারণ কর্ণফুলীর মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদীকে এভাবে অবৈধভাবে দখল ও ভরাট করা উচিত হয়নি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকও অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। পরিবেশ অধিদফতরসূত্রে জানা যায়, নিকট অতীতেও কর্ণফুলী নদীতে সহজেই মিলত মিঠা পানির ৬৬, মিশ্র পানির ৫৯ ও ১৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। কিন্তু দূষণের কবলে এসব মাছ এখন অস্তিত্বহীন। তা ছাড়া ১০ থেকে ২০ প্রজাতির অর্থকরী মাছও বিপন্ন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বর্তমানে কর্ণফুলী নদীতে মিঠা পানির ২৫ ও মিশ্র পানির ২০ প্রজাতির মাছের কোনো অস্তিত্বই নেই। শুধু ফাঁইস্যা, কাঁচকি ও পোয়া মাছ ছাড়া অন্য প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় না। দূষণই এর একমাত্র কারণ।’ অন্যদিকে, দখলের কবলে পড়ে কমেছে নদীর প্রশস্ততা। বন্দরের হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের তথ্যমতে, ১৯৮৯-৯০ সালে ব্রিজঘাট এলাকায় কর্ণফুলীর প্রস্থ ছিল ৮৭০ মিটার। একই জায়গায় ২০০৯-১০ সালের জরিপে প্রস্থ ছিল ৬০০ মিটার। ১৯৯০ সালে চাক্তাই খালের মুখে প্রস্থ ছিল ৬৫০ মিটার। ২০১১ সালে তা ৬০০ মিটারে দাঁড়ায়। গত ২৫ বছরে স্থানভেদে নদীর প্রশস্ততা কমেছে ৫০ থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত বা প্র