বাংলার কন্ঠস্বরঃ
সড়কপথে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে পরীক্ষামূলক ট্রাক সার্ভিস চালানো হবে। আর কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা রুটে পণ্যবাহী ট্রাক চালু করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে ভারত। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশের যাত্রীবাহী বাস যেতে পারবে দেশটির সীমান্তবর্তী চারটি শহরে।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) চুক্তির আওতায় আপাতত ভুটানে যেতে পারবে না বাংলাদেশ ও নেপালের কোনো মোটরযান। আর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু পর্যন্ত শুধু বাংলাদেশের যাত্রীবাহী বাস যেতে পারবে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সুযোগও থাকছে না।
গত ২৯-৩০ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় চার দেশের মোটরযান চলাচল চুক্তি- বিবিআইএন ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক। এতে যাত্রীবাহী প্রটোকল চূড়ান্ত করা হয়। পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে প্রটোকলের খসড়াও প্রস্তাব করা হয়। এসব তথ্য উঠে এসেছে প্রটোকল দু’টিতে।
সূত্র জানায়, দুদিনের বৈঠক শেষে চার দেশের নোডাল অফিসাররা (যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা) সামারি অব মিটিংয়ে সই করেন। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে কলকাতা, ঝাড়খণ্ড, কানপুর, আগ্রা হয়ে দিল্লি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক চালানোয় আগ্রহী বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক সার্ভিস পরিচালনার সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয় আগামী ১৫ মে। একই সময়ে কলকাতা-ঢাকা রুটে পরীক্ষামূলক বাস সার্ভিসও পরিচালনা করা হবে।
একইভাবে ঢাকা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে কাকরভিটা হয়ে কাঠমান্ডু পর্যন্ত রুট সার্ভে এবং পরীক্ষামূলক বাস ও ট্রাক সার্ভিস চালানোয় সম্মত হয় দুই দেশ। আর ঢাকা থেকে ভারতের জাইগাঁও হয়ে ভুটানের সীমান্ত ফুয়েন্টশিলিং পর্যন্ত রুট সার্ভে ও পরীক্ষামূলক ট্রাক সার্ভিস পরিচালনা করা হবে।
বৈঠকে পণ্যবাহী প্রটোকলের খসড়ায় বেশকিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়, কার্গোর নিরাপত্তা ও ট্রানজিট ফি পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া সীমান্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বন্ড সুবিধা, গাড়ির এক্সেল লোড ইত্যাদি বিষয়েও জটিলতা রয়েছে।
যাত্রীবাহী প্রটোকলের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি রুটে নিয়মিত-অনিয়মিত মোটরযান চলাচল করতে পারবে। এগুলো হলো— কলকাতা থেকে ঢাকা, কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, শিলিগুড়ি থেকে চেংড়াবান্ধা-বুড়িমারী দিয়ে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, শিলিগুড়ি থেকে ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা দিয়ে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, গুয়াহাটি থেকে সিলং-ঢাকা হয়ে কলকাতা, আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতা এবং কলকাতা থেকে খুলনা।
প্রতিটি রুটে উভয় দেশ সমান সংখ্যক যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস পরিচালনা করতে পারবে। আর নির্ধারিত সাত রুটে উভয় দেশের অনিয়মিত মোটরযান চালাতে পারবে বছরে সর্বোচ্চ দেড় হাজার। নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্যে আবেদন করলেই শুধু অনিয়মিত সার্ভিস চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে। নিয়মিত সার্ভিসের আওতায় এক দেশের বাস আরেক দেশে সাতদিন অবস্থান করতে পারবে। আর অনিয়মিত সার্ভিস অবস্থান করতে পারবে সর্বোচ্চ ৩০ দিন।
এদিকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা পর্যন্ত যেতে পারবে বাংলাদেশের যাত্রীরা। একইভাবে ভারতের ওই দুই প্রদেশের ব্যক্তিগত গাড়ি বাংলাদেশে আসতে পারবে। এক্ষেত্রে এক দেশের গাড়ি অন্য দেশে সর্বোচ্চ ৩০ দিন অবস্থান করতে পারবে। এক্ষেত্রে কত টাকা ট্রানজিট ফি ও সড়ক ফি আরোপ হবে, তা প্রতিটি দেশের ল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট কমিটি নির্ধারণ করবে। তবে দুই দেশের ক্ষেত্রে এ ফি হবে একই হারে।