বাংলার কন্ঠস্বরঃ
পরপর দুই মাস মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচে থাকল। মাসওয়ারি হিসাবে সর্বশেষ গত মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতেও মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ মূল্যস্ফীতি ও জাতীয় মজুরি সূচক হিসাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। ৪০ মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচে নামে। গত মাসেও এ ধারা অব্যাহত থাকল।
পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত মাসে চিনি ও মাংসের দাম বেড়েছে। তাই মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। এখন সবাই ইলিশ কিনবে। এতে চলতি এপ্রিল মাসে দশমিক ০১ শতাংশ হলেও মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তবে ইলিশ মাসের দাম যাতে না বাড়ে সে জন্য ভোক্তা সংগঠনও তৈরি হয়ে গেছে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কম খান।’
মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বিবিএস আরও বলছে, ডাল, মাছ, মাংস, মসলা, চিনি ও তামাক জাতীয় পণ্যের দাম ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে বেড়েছে দশমিক ৫০ শতাংশ। একই সময় পরিধেয় বস্ত্র, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বাড়িভাড়া, আসবাব ও গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম বেড়েছে দশমিক ০১ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যানুসারে, গত মার্চে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও খাদ্যবহির্ভূত খাতে কমেছে। এ মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিবিএসের প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মার্চ মাসে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি ছিল। মার্চ মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ; গ্রামে এ হার ছিল ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
এদিকে মানুষের মজুরি বৃদ্ধির হার কিছুটা কমেছে। বিবিএসের জাতীয় মজুরি হার সূচকে দেখা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। মার্চ মাসে এর হার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মজুরি বৃদ্ধির হার কমলেও তা মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব পড়ছে না। কেননা সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার বেশি। এটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতা নির্দেশক।