নিজস্ব প্রতিবেদক // একটি বেড়িবাঁধ পাল্টে দিয়েছে এক সময়ের ভাঙনকবলিত এলাকা বরিশালের চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী গ্রামের চিত্র। একসময় ভাঙনকবলিত থাকলেও বর্তমানে বেড়িবাঁধ ঘিরে স্থানীয়ভাবে নানা উন্নয়ন করায় বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এলাকাটি। ঘুরতে আসা মানুষ জানিয়েছে, কোলাহলমুক্ত আর নদীর পাড় হওয়ায় আকৃষ্ট হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, এই ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের শিকার ভাঙারপাড়ে এখন আর নেই কোনো আতঙ্ক, নেই হাহাকার। একটি বেড়িবাঁধে বদলে গেছে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা। বেড়িবাঁধকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দর্শনীয় স্থান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, অবকাশ কেন্দ্র। মুগ্ধ করা পরিবেশে বিকেল হলেই হাজারো দর্শনার্থীর ঢল নামে। অনেকেই এখন ভাঙারপাড়কে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে তুলনা করে নাম দিয়েছেন ‘মিনি কুয়াকাটা’।
এলাকাটি দেখে প্রথমে মনে হয়েছে সাগরপাড়ের কোনো দৃশ্য, তবে আসলে এটি বরিশালের কীর্তনখোলা নদীপাড়ের চরবাড়িয়া তালতলী এলাকা।
ঘুরতে আসা লোকজন জানান, কোলাহলমুক্ত এ নদীর পাড় সবাইকে আকৃষ্ট করছে। আর বিভিন্ন খাবার নিয়ে রেস্তোরাঁ ও ছোট দোকান গড়ে ওঠায় এলাকাটির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ছে।
জানা গেছে, ভাঙনের কারণে একসময় মানবেতর জীবনযাপন করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে ২০১৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর পাল্টাতে শুরু করে এ জনপদের দৃশ্য। ২০২৩ সালে কাজ শেষ হলে বেড়িবাঁধকে ঘিরে তৈরি হয় মানুষের আয়ের উৎস। বর্তমানে চরবাড়িয়ার তালতলী এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০টি দোকান ও রেস্তোরাঁ।
ভাঙারপাড়ে মেয়ে নিয়ে ঘুরতে আসা রুপন্তী বলেন, আমার কাছে কুয়াকাটার চেয়ে কীর্তনখোলা নদীর পাড় ভালো লাগে। নির্মল বাতাস, গ্রামীণ পরিবেশ, শান্ত নদী। এখানে পরিবার নিয়ে সময় কাটানো সেরা। সুযোগ পেলেই আমি এখানে আসি। বেড়িবাঁধে বসে নদীর জলে পা ভেজাই। এছাড়া এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোর খাবারও খুব ভালো ও নাগালের মধ্যে।
একটি বেড়িবাঁধে পাল্টে গেছে চরবাড়িয়ার এলাকার চিত্র
শিপন হাসান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, বরিশালের মধ্যে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসার সবচেয়ে সুন্দর জায়গা এটি। এখানে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই ধরনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সন্ধ্যার পরে রেস্টুরেন্টগুলোর নান্দনিক আলোকসজ্জা এখানে সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়।
রান্না বাড়ি রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী লিয়ন বলেন, এই ভাঙার পাড়ে এখন প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসে। সেই ভ্রমণ পিপাসীদের কথা মাথায় রেখে রেস্টুরেন্টগুলো সাজানো হয়েছে। যাতে তারা পরিবার নিয়ে ছবি তুলে তাদের সুন্দর মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে পারে। পাশাপাশি সবধরনের খাবারের দাম ও মান সঠিক রাখা হয়েছে।