মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জেরে আ’লীগ নেতা
আঃ ছালাম দেওয়ান’র সাথে প্রতিবেশী দুই যুবকের
বাক-বিতান্ডা ও হাতহাতির ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে আহত সেজে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আহত সাজার নেপথ্যে ছিলো, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৭/০৫/২০২২ইং দুপুর আনুমানিক ৩টার সময় দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের মাঝোরচর খেয়া ঘাটের সবুজের দোকানের সামনে ঘটনাচক্রে আঃ ছালাম দেওয়ান’র মুখোমুখি হয় স্থানীয় দুই যুবক মোঃ শাহীন বেপারী ও রাতুল চৌধুরী। এ সময় উভয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায় তা হাতাহাতিতে রুপ নিলে স্থানীয়রা হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ওই ঘটনাকে প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে আহত সেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোষ্ট করেন আঃ ছালাম দেওয়ান। স্থানীয়রা জানান, বাকবিতান্ডা এবং হাতাহাতির কারন ছিলো, ওই দুই যুবকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ছালাম দেওয়ান একটি মামলা দায়ের করেন, সে মামলাটি ছিলো অসত্য তথ্য উপাত্ত দিয়ে। আঃ ছালাম দেওয়ান হলেন স্থানীয় এমপি পংকজ নাথ’র অনুসারী। সুত্র জানায়, মেহেন্দিগঞ্জের ৬টি ইউপিতে নির্বাচন চলছে, এই মুহূর্তে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য হয়ত কেউ কেউ আঃ ছালাম দেওয়ানকে ব্যবহার করছেন। কারন ছালাম দেওয়ান এবং স্থানীয় এমপি পংকজ নাথ’র অনুসারীরা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বরাবরের মতোই নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। বর্তমানের নির্বাচন প্রতিহিংসায় রূপ নিয়েছে, সেটা মোকাবিলা করাই যেন মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে এলাকা। নির্বাচনকে সামনে রেখে আ’লীগের অভ্যান্তরিণ দ্বন্দ্ব নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মেহেন্দিগঞ্জের ৬টি ইউপিতে ১৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, গত মঙ্গলবার ছিলো মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন, এদিকে বরাবরের ন্যায় এবারও ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। নির্বাচনে তার প্রার্থীদের বিজয় করতে এলাকায় নানান ইস্যু তৈরি করে যাচ্ছেন। আঃ ছালাম দেওয়ান আহত সেজে হামলার অভিযোগটিও একটি ইস্যু। এ বিষয়ে আঃ ছালাম দেওয়ান বলেন, আমার দায়ের করা মামলার আসামিরা আমাকে মারধর করেছে। অভিযুক্তরা বলেন, ছালাম দেওয়ান আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করলে বাকবিতন্ডা হয়েছে, তাকে মারধর করা হয়নি, সে এর আগেও এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা বলেন, এসব পংকজ নাথ এমপির নাটক, এর আগেও পংকজ নাথ’র পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ’র অভিযোগ, মেম্বারের বাড়িতে ডাকাতির নাটক, অপমৃত্যুকে কেন্দ্র করে হত্যা মামলা দায়ের করার চেষ্টা চালায়। স্থানীয় থানা পুলিশের দক্ষতায় সেসব সাজানো নাটক ফাঁস হয়ে গেলে মিথ্যা মামলার হাত থেকে রক্ষা পায় নিরীহ মানুষ। এমপির লোকজন নিজেদের আদিপত্ত বিস্তার করতে একের পর এক মিথ্যা মামলা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আঃ ছালাম দেওয়ান, স্থানীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা রাঢ়ীর উপর হামলা করে দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন , খেয়ার ডাক নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা, নদীতে ডাকাতি ও চাদাবাজি মতো অভিযোগ ওঠেছে ছালাম দেওয়ান’র বিরুদ্ধে। ।এলাকায় হামলা-মামলার ভূড়ি ভূড়ি অভিযোগও রয়েছে। উল্লেখ গত বছর উলানিয়া ইউপি নির্বাচনেও নৌকার ৪ কর্মীকে হত্যা করে স্থানীয় সাংসদ পংকজ নাথ’র অনুসারী বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এদিকে ছালাম দেওয়ান এর সাথে বাকবিতন্ডা এবং হাতাহাতির বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।