নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল ওয়াদুদের দায়িত্ব পালন সম্পূর্ণ বৈধ ও নিয়ম সংগত বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয় সূত্র। আদালতের রায়, জনপ্রশাসন, অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা স্ব স্ব উপজেলায় কর্মরত আছেন। যেহেতু আদালতের রায়ের সাপেক্ষে তাদেরকে বর্তমানে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ায় রয়েছেন।
আদালতের রায় ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) দুর্যোগ পরিচালনা ও ত্রাণ কর্মসূচি প্রশাসন মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালীকরণ (এসএমওডিএমআরপিএ) প্রকল্পের আওতায় ২০১৫ সালে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন মো. আবদুল ওয়াদুদ। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। যেহেতু তাদের নিয়মিত করণের জন্য আদালতের রায়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ।
জনপ্রশাসন, অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ ব্যাখ্যা অনুসারে, আদালতের রায়ে উল্লেখ রয়েছে, দেশের ২০০টি এ-গ্রেড উপজেলা জন্য দশম গ্রেডের ২০০ টি পদ সৃষ্ট হয়েছে। উক্ত পদ তাদের রায়ের আলোকেই সৃষ্টি হয়েছে। কারণ তারা সরাসরি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মূল কারিগরি হ্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একইসাথে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত তাদের সহকর্মীদেরকে আদালতের রায়ের সাপেক্ষে ২১১ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে আর্থিককরণ করেছে। বাকিদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বা সমমানের দশম গ্রেডের পোস্টে বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিধায় তাদের এখানে আর্থিককরণের বিষয়ে ডিপার্টমেন্টের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গত ০২/০৫/২০২৫ তারিখে আদালয়ের রায় বাস্তবায়নের লক্ষে তাদেরকে আর্থিককরণের ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিবকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। যা সংগৃহীত।
সরকারের কার্যক্রমে অপরিহার্য ভূমিকা
সরকারের ত্রাণ, পুনর্বাসন, কাবিখা, টিআর, খাদ্যসহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ সকল সব ধরনের প্রকল্পের মাঠপর্যায়ের কারিগরি সহায়তা ও এস্টিমেটকরণ কাজের কারগরি সহায়তা , প্রি ওয়ার্ক, পোস্ট ওয়ার্ক, ইস্টিমেট, কাজের তদারকি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাজের সহায়তা করে থাকেন উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা। তাঁদের তত্ত্বাবধান ছাড়া এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা বিবেচনায় মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, উপসহকারী প্রকৌশলীরা মাঠপর্যায়ে সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমের অপরিহার্য অংশ, তাই তাঁদের দায়িত্ব ও অবস্থান বৈধ এবং প্রশাসনিকভাবে সুরক্ষিত। বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ- সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে মোঃ আবদুল ওয়াদুদকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে যেখানে দাবি করা হয় যে, তিনি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধভাবে অফিস করছেন। কিন্তু সংশ্লিস্ট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী , এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তিকর। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে কোনো প্রকার অব্যাহতিপত্র ইস্যু করা হয়নি। বরং, সংশ্লিষ্ট পদধারীরা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। একটি প্রভাবশালী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থে আবদুল ওয়াদুদকে সরাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে প্রচার করেছে বলে জানা গেছে। উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, আমি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী আদালতের রায়ের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করছি। মাঠপর্যায়ের প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখাই আমার নীতি। কিছু পক্ষ প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বজায় না রেখে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যর্থ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি কখনোই কোনো অনিয়ম বা ঘুষ গ্রহণে জড়িত নই। বরং, প্রতিটি প্রকল্প নির্ধারিত নিয়মে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য নিয়মিত মাঠে কাজ করছি।
উল্লেখ্য, সরকারের চলমান প্রক্রিয়া অনুযায়ী এই পদধারীরা রাজস্ব খাতে রূপান্তরের অপেক্ষায় আছেন বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন। চলতি মাসের ৩ তারিখে ইজিপিপি নির্দেশিকার উপরে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ দেশে সকল জেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা নিয়ে হোটেল কন্টিনেন্টাল ইন্টারন্যাশনালে একদিনের সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় উপসহকারী প্রকৌশলীরা পুর্বে যে প্রকল্পে বাস্তবায়ন করতো সেই প্রকল্পেই বহাল থাকবে। এর তথ্য সংগৃহীত ।
সম্পাদক : মো: রাকিবুল হাছান(ফয়সাল)।