
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ঘটেছে এক নাটকীয় ঘটনা। একদিকে চলছে বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানের ধুমধাম আয়োজন। অন্যদিকে সেই তরুণকে বিয়ের দাবিতে বাড়ির দরজার সামনে অনশনে বসেছেন প্রেমিকা। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
জানা গেছে, ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের ঘাইবাড়ি গ্রামের মো. মিন্টুর ছেলে মো. সামিউল ইসলাম সম্প্রতি অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। অথচ তারই বাড়ির সামনে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে পাশের গ্রামের ১৫ বছর বয়সী এক তরুণী বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রোববার (৯ নভেম্বর, দুপুর ২টা) অনশন অব্যাহত রেখেছেন।
অনশনরত মেয়েটি জানান, এক বছর আগে সামিউলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সামিউল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। কিন্তু ১৫ দিন আগে থেকে সামিউল হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
মেয়েটি বলেন, আমি তাকে বিয়ের কথা বললে সে বলে মা আর ফুফুকে রাজি করাতে হবে। এমনকি পরিবারের কেউ রাজি না হলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার ভয় দেখাতে চেয়ছিলেন প্রেমিক সামিউল।
তিনি আরও জানান, তার পরিবার থেকে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হলেও সামিউলের পরিবার রাজি হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি প্রেমিকের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করলে সামিউল অন্য এক মেয়েকে দেখিয়ে বলেন আমি বিয়ে করে নিয়েছি। এ সময় সামিউলের মা তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
ছেলের সাথে মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দিয়ে নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে রেখে দেন।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনাটি সামাজিকভাবে লজ্জাজনক। একদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা। অন্যদিকে নতুন বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। ছেলের পরিবার থেকে সমাধানের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেনা বলেও জানা যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বাবু বলেন, ঘটনাটি জানার পর চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেখানে যাই। ছেলের পরিবার জানিয়েছে, তিন দিন আগে সামিউল অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। তবে এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেছি এই মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক চুটু বলেন, খবর পেয়ে আমি ইউপি সদস্য পাঠিয়েছিলাম। প্রশাসনিক ভাবে এটা আমার এখতিয়ার বহির্ভূত । তার পরেও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ডেকেছিলাম কিন্তু কেউ আসেনি। মেয়ের পিতাও কোনো দায়দায়িত্ব নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে ভোলাহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, মেয়েটিকে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক : মো: রাকিবুল হাছান(ফয়সাল)।