স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর খিলগাঁও ও বিমানববন্দর এলাকা থেকে রবিবার রাতে জেএমবির ৪ সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগ (ডিবি)।
আটকরা নিয়মিত পাকিস্তানে যাতায়াত করত। তাদের বিরুদ্ধে বিদেশী এক গোয়েন্দাসংস্থার গুপ্তচরবৃত্তির সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটকরা হলেন- মো. ইদ্রিস শেখ ও মো. মকবুল শরীফ, মো. ছালাম ও মো. মোস্তফা জামান।
এদের মধ্যে ইদ্রিস পাকিস্তানের ভুয়া নাগরিকত্ব নিয়ে সেদেশের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন।
আটকের সাথে বিদেশী এক হাইকমিশনার মহিলার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি’র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রবিবার রাতে এক বিশেষ অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৬টি জিহাদী সংক্রান্ত বই, ৩টি পাসপোর্ট, ৫টি মোবাইল, ৪ হাজার পাকিস্তানী রুপি, ১৫০০ ভারতীয় রুপি, বাহরাইনের ১৩০০ ডলার এবং জর্ডানের ১৬০০ ডলার উদ্ধার করা হয়।’
আটক ইদ্রিস শেখের কাছ থেকে একটি স্পাই মোবাইল উদ্ধার করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মোবাইলের মাধ্যমে সে বিদেশী এক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সরাসরি তথ্য পাচার করত। বিদেশী ওই গোয়েন্দা সংস্থার এক ব্যক্তির সাথে নিয়মিত যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণ মোবাইলেই পাওয়া গেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদেও জানা গেছে। তার সাথে বিদেশী এক হাইকমিশনার মহিলার সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।’
‘ইদ্রিস শেখ ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানে যান এরপর সেখানে এক নারীকে বিয়ে করে সেখানকার নাগরিকত্ব নেন। সে ২০০২ সালে পাক মুসলিম এ্যালায়েন্স নামক রাজনৈতিক দলের হয়ে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন এবং পরাজিত হন। ২০০৪ সালে সে র্যাবের হাতে একবার ধরা পরেছিল বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।’
এরপর বাগেরহাটের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে সে পাসপোর্ট তৈরি করে ইদ্রিস। গত ২ বছরে সে ৪৮ বার পাকিস্তানে যাতায়াত করেছে বলে নিশ্চত হওয়া গেছে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।
আটক মকবুল শরীফও ১৯৮৫ সালে পাকিস্তানে গমন করে এবং কাপড়ের ব্যবসার অন্তরালে সে নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করত। তার সাথে রোহিঙ্গা-আরাকান ভিত্তিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে তার পাসপোর্ট উদ্ধার করা যায়নি।
ছালাম একজন বিহারী এবং মোস্তফা জামান পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনার এয়ারলাইন্সের এসিস্টেন্ট ট্রাফিক ইন্সপেক্টর।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা সবাই সেল্টারের জন্য জেএমবির একটি গ্রুপের সাথে জড়িত ছিল। নাশকতা করে এবং জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে অর্থের যোগান দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।’
তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।