বাংলার কন্ঠস্বর প্রতিবেদক : প্রথম ম্যাচে উইকেটশূন্য। দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথম স্পেলে মাত্র একটি। অফকাটার মুস্তাফিজের প্রত্যাশা-প্রাপ্তিতে তখনও হতাশার চালচিত্র। ক্রিকেট বিশ্বে বিপুল আলোচিত মুস্তাফিজ অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচের শেষ স্পেলেই রং ছড়িয়েছেন। নিয়েছেন আরও দুই উইকেট। সাকুল্যে ৩/৩৩। তারপরও হয়তো মুস্তাফিজ দর্শকদের তৃপ্ত করতে পারেননি। কেন? তার উত্তর দিয়েছেন ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে। নিয়েছেন অহম করার মতো ৫ উইকেট। যা আনন্দে উদ্বেলিত করেছে দর্শকদের। সিরিজে তার মোট উইকেট ৮টি। তাতেই ওয়ানডে সিরিজের সেরা বোলারের নাম মুস্তাফিজ।
জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার ম্যাচে একটি বিশ্ব রেকর্ডও ছুঁয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। দারুণ সম্ভাবনা থাকার পরও পারেননি নতুন রেকর্ড গড়তে। আর একটি মাত্র উইকেট নিলেই মুস্তাফিজ নিউজিল্যান্ডের মিশেল ম্যাকলেনাহানকে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় উঠে যেতেন। ওয়ানডেতে ৯ ম্যাচে ২৬ উইকেট তুলে নিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন ম্যাকলেনাহান। মুস্তাফিজের নামের পাশেও তাই। ক্যারিয়ারের শুরুতে তাক লাগানো বোলারদের দ্রুতলয়ে বেশি উইকেট তুলে নেওয়ার আঙিনায় মুস্তাফিজের নাম এখন ভাস্বর হয়েই থাকবে। হয়তো মাশরাফির বিবেচনায় বিশ্ব রেকর্ডের হিসাব ছিল না। তারপরও ব্যক্তিগত অষ্টম ওভারের শেষ ৪টি বল যখন মুস্তাফিজ করেছেন, স্লিপ ও গালি অঞ্চলে উইকেটরক্ষকসহ মোট ৮ জন ফিল্ডার সজাগ ছিলেন ক্যাচ লুফে নিতে। এমন দৃশ্য ওয়ানডেতে খুবই বিরল। সবগুলো বলই ছিল আফসোসময়, হতে হতে হয়নি।
৯ ম্যাচে মুস্তাফিজের উইকেট ২৬টি। এর মধ্যে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ ম্যাচে। চলতি বছর ১৮ জুন ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচেই মহাকাণ্ড করে বসেন এই বাঁ-হাতি পেসার। ভারতের বিপক্ষে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৩ দিন ব্যবধানে ওই ভারতের বিপক্ষেই পরের ম্যাচে ৬ উইকেটের গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ভারতের পত্র-পত্রিকায় মুস্তাফিজকে নিয়ে বিস্তর গুণকীর্তন হয়েছে। তার অফকাটারের ভূয়সী প্রসংশা করা হয়েছে। সেখান থেকে অফকাটার খ্যাতির দ্রুতি ছড়াতে সময় লাগেনি। বাঁ-হাতি মুস্তাফিজ একাধারে ইন সুইং, আউট সুইং, এমনকি রির্ভাস সুইংও করতে পারেন। বিশেষ করে তার স্লোয়ার অফকাটারে ক্রিকেট বিশ্ব অবাক।
২০১৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই নজর কেড়েছিলেন মুস্তাফিজ। এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি। যদিও তার জাতীয় দলে অভিষেক টোয়েন্টি২০ ম্যাচে। পাকিস্তান সিরিজে এপ্রিলে। সেখানেই তিনি নিজ হাতেই খুলে নিয়েছেন জাতীয় দলের সব দরজা। বলা যায়, ক্রিকেটের সব ভার্সনেই এখন অপরিহার্য ক্রিকেটার মুস্তাফিজ।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মুস্তাফিজ চিবাবাকে তুলে নিয়েছেন বোল্ড করে। প্রথম স্পেলেই তিনি তুলে নিয়েছেন আরেকটি। আর শেষ স্পেলে সেই মুস্তাফিজ জাদু অবগাহন করেছে মিরপুর স্টেডিয়ামের দর্শকরা। ব্যক্তিগত ৭ম ওভারে মুস্তাফিজ একে একে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। দুইয়ে দুইয়ে ৪। আর পরেরটি নিয়েছেন ব্যক্তিগত ৮ম ওভারে। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলেই মুস্তাফিজ পানিয়াঙ্গারাকে তুলে নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে তামিম-ইমরুল-মাহমুদউল্লায় ২৭৬ রান তুলেছিল। আর মুস্তাফিজের দিনে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ২১৫ রানে। জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ৬১ রান। চলতি সিরিজে সফরকারীরা সবগুলো ম্যাচেই অলআউট হয়েছে।