খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বেড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দামকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এসব স্কুলের ৪০ থেকে ৫০ জনের বেশি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্র।
ভুক্তভোগী অভিভাবকদের বলছেন, তাদের ফোনে উপবৃত্তির টাকা আসলে শিক্ষকরা তাদের জানিয়ে দেন। তারা স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে টাকাগুলো তুলে থাকেন। প্রতারকরা তাদের ফোন করে নগদের এজেন্ট, কর্মকর্তা, স্কুলের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে একটি পিন নম্বর পাঠায় এবং এটি তারা জানতে চায়। কিন্তু এবার তাদের মোবাইলে একটি ওটিপি কোড পাঠিয়ে তাদের বলা হয়েছে, দ্রুত টাকা পেতে হলে কোডসহ আমাদের নির্দেশনা অনুসরণ করুন। এভাবে নেওয়া হয় তথ্য। পরবর্তীতে নগদ একাউন্টে থেকে হাতিয়ে নেন টাকা।
প্রতারণার বিষয়ে বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকেরা বলছেন, প্রতারণার বিষয়টি তারা অভিভাবকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছেন। তারা বলেন, মূলত গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকরা তেমন সচেতন না। তাদের প্রতারণা করে তথ্য জানতে চেয়েছে এবং তারা গোপন পিন নম্বরসহ সব বলে দিয়েছে। আর এভাবেই প্রতারক চক্র কোনো সফটওয়ারের মাধ্যমে তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ভুক্তভোগীদের সহায়তা ও প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তারা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অভিযোগ যতটা পেয়েছেন এর বাইরেও হয়তো আরও অনেকেই প্রতারিত হতে পারেন। হয়তোবা তারা এখনো বিষয়টি অবগত নন। কেননা এখনো অনেক অভিভাবক টাকা তুলেননি। অভিভাবকদের মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। তিনি প্রতারণার শিকার অভিভাবকদের তালিকা চেয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি তারা স্থানীয় থানায় জানিয়েছেন।
এদিকে মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজনিন নাহার দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, ওই স্কুলের প্রায় ১৬ জন অভিভাবক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে অভিভাবকরা তাদের বিরুদ্ধেই উল্টো অভিযোগ তুলছেন। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন প্রতারকচক্র গোপন পিন নম্বর হাতিয়ে নিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে।
এ বিষয়ে পবা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রতারণার শিকার অভিভাবকদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম জানান, এরকম একটি তালিকা উপজেলা থেকে পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে বিস্তারিত তথ্য নেই। এজন্য বিস্তারিত তথ্যসহ তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। সেটা পেলে নগদের অফিসসহ প্রশাসনকে সেই তালিকা প্রদান করা হবে।
তিনি আরও জানান, যেসকল ফোন নম্বর থেকে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়া হয়েছে তাদের কেউ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। এছাড়া এরকম প্রতারণার শিকার যেন অভিভাবকরা না হন সেজন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মাধ্যমে তাদের সচেতন করা হচ্ছে।