নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। বিগত দিনে অন্দোলন সংগ্রামে দলে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই ক্লিন ইমেজের নেতা। গত ১৯ জুলাই আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর দাড়ালো অস্ত্রের কোপে জখম হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ২৫ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে ৫ আগষ্ঠ মুক্তি পান তিনি। সম্প্রতি দলকে এগিয়ে নিতে নানামুখি মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করে সাধারন মানুষের প্রসংশা কুড়িয়েছেন জিয়া উদ্দিন সিকদার।
যার মধ্যে বন্যাদূর্গতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান পাঠানো, হাট-বাজার চাঁদাবাজমুক্ত করা, কোটা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের বাস ভাড়া সম্পূর্ন ফ্রি করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই নেতা।
এদিকে সরকার পতনের পর নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে ‘বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতি’। কার্যক্রম পরিচালনাও স্থবিরতা দেখা দেয়। সমিতির কার্যকরী পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ অনুপস্থিত থাকায় যাত্রী সেবা ও সমিতির কর্মকান্ড পরিচালনায়ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ মুহুর্তে সমিতির সদস্যদের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত হয় ৭ সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এ কমিটিতে সকলের অনুরোধে আহবায়কের দায়িত্ব নেন জিয়া উদ্দিন সিকদার। ইতিপুর্বে তিনি এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া সমিতি’র একজন প্রবীণ সদস্যও তিনি। এরপর থেকে যাত্রী সেবার মানোন্নয়নের পাশাপাশি সুশৃঙ্খলভাবে সমিতি পরিচালনায়ও ঐক্যমত পোষণ করে ঐক্যবদ্ধ হন তিনি। গ্রহণ করেন নানামুখি জনসেবামূলক উদ্যোগ। তবে তাকে বিতর্কিত করতে মাঠে নেমেছে একটি কু-চক্রি মহল। মনগড়া কিছু গল্প-কাহিনী ছড়িয়ে শান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা চেষ্টা করে যাচ্ছে।
জানা গেছে- গত ৮ আগস্ট সমিতির সাম্প্রতিক সংকট বিবেচনায় তা থেকে উত্তোরণে সদস্যদের উপস্থিতিতে জরুরী বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯০ সদস্যের মধ্যে ৮০ জন সদস্য অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচ.এম.এ মান্নান। সভাটি সামগ্রিকভাবে পরিচালনা করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়া উদ্দিন সিকদার।
সভায় সভাপতি সমিতির মালিকবৃন্দের র কথা চিন্তা করে সমিতি পরিচালনায় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মালিকবৃন্দের জোড়ালো দাবীর প্রেক্ষিতে জরুরী বর্ধিত সভার আয়োজনের বিষয়টি সকলকে অবহিত করেন। একই সাথে করণীয় শীর্ষক সদস্যদের পক্ষ থেকে মতামত তুলে ধরার আহবান জানান। সভায় সমিতির কার্যক্রম স্থবিরতায় কথা বিবেচনায় বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১জন আয়বায়ক মনোনীত করে ৭ (সাত) সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব রাখেন নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা।
এরই ধারবাহিকতায় ৭ সাত সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনের মতামত প্রদান করেন তারা। এছাড়া আহবায়ক পদে জিয়াউদ্দিন সিকদারের পক্ষে সমর্থন জানানো হয়। দাবির প্রেক্ষিতে সকলের মতামত অনুযায়ী সভায় সমর্থন গ্রহণযোগ্যতা প্রাপ্ত হয়। সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাত সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়।
গত ১৫ বছর বাস টার্মিনালগুলো নিয়ন্ত্রণকারীরা একচেটিয়া চাঁদাবাজি করে এই খাতের সুনাম নষ্ট করেছে। জিয়া উদ্দিন সিকদার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে টার্মিনালকে চাঁদাবাজ মুক্ত ঘোষণা করে বলেন- এখানে কেউ চাঁদা উত্তোলন করতে পারবে না, কেউ দিবেও না। আগে দেয়া চাঁদা এখন দিতে হবে না। সেই অর্থ এখন থেকে আমরা দেশ বিনির্মাণে ব্যয় করবো। শিক্ষার্থী নেতৃবৃন্দর সুপারিশে গত আন্দোলন-সংগ্রামে আহতদের বিনা ভাড়ায় স্ব-সম্মানে পরিবহণ করা হবে। এছাড়া ছাত্র-ছাত্রী, আমাদের ভাই-বোন কিংবা সন্তান যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তাদের মধ্যে অনেকে শহিদ হয়েছেন। তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা আবার স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি। আর তাদের সম্মানে আমরা শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ ভাড়া সৌজন্য করে দিয়েছি।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার সাংবাদিকদের বলেন, বাস মালিক সমিতি হচ্ছে একটি ব্যবসায়িক সমিতি। ব্যবসা পরিচালনার জন্য কাঠামোগত প্রক্রিয়া সবসময়ে সচল রাখতে হয়। কিন্তু আগের কমিটির লোকজন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কেউ আসছিল না। মালিকরা অনেকভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। তারা বলেছেন, তারা আসতে পারবেন না। এজন্য সাধারণ সভা করে আমাকে আহবায়ক করে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন- আমার ক্ষমতার লোভ নেই। আমি সকলের অনুরোধে ও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কমিটিতে পদ গ্রহণ করেছি। এ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। ভালো কাজ করলে সমালোচনা হবেই।