সত্য সংবাদ ডেস্ক।।
বরিশালে সদর রোডে আবাসিক হোটেলে কাটখালি হাইওয়ে থানার ওসি লাশ উদ্ধার ও মৃত্যু নিয়ে ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়েছে। জনমনে মৃত্যু নিয়ে দেখা দেয়িছে নানা প্রশ্ন। ওসি জুবায়ের মৃত্যু নিয়ে প্রথমে স্ট্রোক করে মারা গেছেন খবর প্রচার হলেও এখন বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল। তার মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে এক আগন্তক নারী। তবে কে সে নারী আর তাকে বাচাতে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মৃত্যুর খবর তার পরিবারকে জানিয়েছেন বিকালে এমনটি দাবি করেছেন তার পরিবার। আগন্তুক নারীকে ঘিরে মৃত্যুর রহস্য ক্রমশ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে মনে করছে পরিবার। কেন এই দীর্ঘ সময় কালক্ষেপণ হয়েছে তা তারা জানেন না। তবে পরিবারে পক্ষ থেকে এটাকে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসাবে দাবি তোলে। ঘটনা ৭ এপ্রিল রাতে। বরিশাল সদর রোড হোটেল শামসে উঠেন কাটখালি হাইওয়ে থানার ওসি জুবায়ের। তবে রেজিট্রি খাতায় এন্ট্রি ছিল না তার নাম। সকাল ৯টার দিকে এক নারীকে নিয়ে হোটেলের রুমে আসেন ওসি জুবায়ের। তবে কাকে নিয়ে আসছেন তার নাম ও নেই হোটেলের রেজিস্ট্রারে। দুপুর ১২টায় সেই নারী হোটেলের ম্যানেজারকে জানান, জুবায়ের অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে মেডিকেল নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে সেই নারীকে
স্থান ত্যাগ করতে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে হোটেলে থাকা মালিক পক্ষ ও বরিশালের মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ছগির হোসেনের বিরুদ্ধে। পরিবার অভিযোগে জানায়, জুবায়েরের মৃত্যু হোটেলে হলেও তাকে নাটকীয়তা ভাবে হোটেল মালিক মানিক, ছগির হোসেনকে জানালে তারা কোতয়ালি থানা পুলিশের গাড়িতে করে মেডিকেল নিয়ে গেলে সেখানে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। অভিযোগ আছে, হোটেল শামস এ ডিবি ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন মালিকানাধীন শেয়ার রয়েছে। তার প্রভাব খাটিয়ে এই হোটেলে অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে অপর শেয়ারে থাকা মালিক মানিক। মানিকের বরিশালে রয়েছে চারটি হোটেল। যা ডিবি ছগির হোসেনের শেল্টারে পরিচালনা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়ত যাতায়েত করেন নিজ হোটেলে। আর সেখানে থেকে ডিবি এই কর্মকর্তা নানা অনৈতিক কর্মকান্ড করে থাকে। হোটেল মালিক মানিক ছগির হোসেন কে আপন খালাতো ভাই বলে দাবি করে মানিক। স্বঘোষিত আয়নাঘর হিসাবে পরিচিত মাদক কারবারিদের কাছে। অনেকে জানান, মাদক কারবারিদের আটক করে হোটেল সামসে আটকে রেখে নির্যাতন করাসহ টাকা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, বিতর্কিত ডিবি ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় চাকরি করে আসছে। তার সুবাদে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে পড়ছেন তিনি। এর আগে গৌরনদীতে থাকা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেওয়াসহ মাসোয়ারা নিয়ে অবাদ মাদক ব্যবসা করতে দিতেন তিনি বলে অভিযোগে উঠে এসেছে। এরপর বরিশাল কাউনিয়া থানার তদন্ত অফিসার দ্বায়িত্বে থাকা অবস্থায় অবৈধ ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা গড়ে গড়েছেন কয়েক কোটি টাকা। শেষে বরিশাল মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর দ্বায়িত্ব নিয়ে বরিশাল উপজেলা গৌরনদী থেকে শেখ মাহাবুব নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে বিপুল পরিমান মাদকসহ আটক করে এয়ারপোর্ট থানায় আটক দেখিয়ে উদ্ধারকৃত মাদক নাম মাত্র জব্দ দেখিয়ে বাকি মাদক হীরা মাঝির কাছে ১৪লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেও বলে জানা গেছে। এর আগে কাউনিয়ায় মাদক ব্যবসায়ী কালামের বাসায় অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে না পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি মিডিয়া কর্মী জানলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২০হাজার টাকা নিয়েছি। দীর্ঘদিন বরিশালে থাকার সুবাদে বিপুল টাকার মালিক হয়ে তার দেখানো পথে হেঁটে সম্প্রতি ডিবির উপ-পরিদর্শক আউয়াল বহিস্কার হয়েছেন। আর তাতে ইন্সপেক্টর নিজেই অভিযোগ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনারের কাছে। এদিকে হোটেল শামসে থাকা ম্যানেজার রুবেল জানান, ছগির স্যার আমাদের এই হোটেলের মালিকানার সাথে জড়িত রয়েছেন। আর আমরা তার নির্দেশনা মত কাজ করে থাকি। ওসি যুবায়ের স্যারের মৃত্যু হলে তার নির্দেশনায় আমি হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করে রাখি। তবে সে সব জানে কোন মেয়ে হোটেলে আসছে। ওসি জুবায়ের স্যার মারা গেলে আমরা তাকে আগে জানিয়েছি। সে কোতয়ালি থানার ওসি স্যারকে জানিয়ে গাড়ি এনে মেডিকেল নিয়ে গেছে। আমরা আসলে স্যরের উপরে কথা বলতে পারি না। তারা যেভাবে বলে আমরা সেভাবে করে থাকি। তবে ওসি জুবায়ের মৃত্যু নিয়ে হোটেল মালিক মানিক বলেন, জুবায়ের অসুস্থ হলে ম্যানেজার আমাকে জানালে আমি ছগির হোসেনকে জানাই সে এসে মেডিকেল নিয়ে গেছে। আর তার সাথে যে মহিলা ছিল সবার ব্যবস্থা মাঝে সটকে পড়ে।তথ্য সংগ্রহে গেলে মানিক জানান ছগির আমার আপন খালাতো ভাই হয়। এক পর্যায়ে সে কথা বলতে গেলে তাল গোল পাকিয়ে ফেলে। তবে মানিকের নিয়নন্ত্রে রয়েছে বরিশালে চারটি হোটেল। মানিকের ছেলে আশিকের সাথে যোগাযোগ করেই সেই আগুন্তক নারী হোটেলে আসে,ওসির মৃত্যুর পর থেকে আশিক ও সেই নারী আত্নগোপনে রয়েছেন। আশিকের ব্যক্তিগত মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। ওসি জুবায়ের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন আমাকে অসুস্থতার বিষয়ে জানালে আমি গাড়ি পাঠালে তাকে মেডিকেল নিয়ে যায়। আর তার মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তার উপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল ডিবি ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন বলেন, আমি কোন কিছু সাথে জড়িত না। আমি কোন হোটেল ব্যবসা করি না। তবে আমার সাথে ভালো সম্পর্ক আছে সে আমার কোন আত্নীয় না। তবে কি কারণে আমার নাম বলছে তা আমি জানি না। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বলেন, ইন্সপেক্টরের মৃত্যুতে ময়না তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের প্রশাসনের কেউ যদি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি জুবায়ের মৃত্যুতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কেউ অভিযোগ করে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।