বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘টেকনাফে বঙ্গোপসাগরের অদূরে নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে ট্রলারসহ ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। যার মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি ও ২ জন রোহিঙ্গা রয়েছে।’
তবে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে অদূরে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় একটি ট্রলার ও ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটের ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।
তিনি জানান, টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাযুকখালীযা পাড়ার বাসিন্দা শওকত আলমের ছেলে শাওন আহমদ নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সেন্টমার্টিন দ্বীপে অদূরে সীতা এলাকায় সাগরে মাছ শিকারের সময় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা একটি স্পিডবোটযোগে বাংলাদেশ জলসীমানার সীতা এলাকায় ঢুকে অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে। পরে ট্রলারসহ ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।
মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর সমুদ্রপথে টহল জোরদার করে আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা উপ-ইউনিট। টহল চলাকালে আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা বাংলাদেশি ট্রলারগুলো শনাক্ত করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়, মংডু টাউনশিপের একরাজা গ্রাম উপকূল থেকে প্রায় ২.১৪ কিলোমিটার পশ্চিমে একটি কাঠের মাছ ধরার ট্রলারসহ সাতজন জেলেকে আটক করা হয়। ট্রলার থেকে তিনটি মাছ ধরার জাল এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৬০ কেজি মাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
সবশেষ, ২৭ অক্টোবর সোমবার বিকেলে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মাছ ধরার সময় মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করার অভিযোগে শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া এলাকার দুই সহোদর আব্দুর রহমান (৩৮) ও আবুল কালাম (৪০), শফি আলম (১৯) এবং আরও একজন রোহিঙ্গা জেলেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আটক করে। তাদের এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরী বলেন, ‘একটি ট্রলারসহ ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।’
বিজিবির দেয়া তথ্য মতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ৩২২ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি নৌযান ফেরত আনা সম্ভব হলেও আরও ১৭টি ট্রলারসহ ১৩৩জনকে ফেরত দেয়নি আরাকান আর্মি।