
স্টাফ রিপোর্টার।। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের খিরাকাঠি গ্রামে টানা হুমকি, ভাংচুর ও মানহানিকর প্রচারণার ঘটনায় এক প্রবাসীর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী মজিবর মোল্লা ও তার সহযোগীরা বিভিন্নভাবে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি এবং হামলা চালিয়ে আসছে।
গত ১৫ নভেম্বর গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা স্থানীয় বাসিন্দা মোসাঃ তাসলিমা বেগমের বসতবাড়ির সামনে টিনের বেড়া ভাংচুরের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। তাসলিমা বেগমের অভিযোগ অনুযায়ী, রাত ১টার দিকে দুর্বৃত্তরা তার বাড়ির সামনের টিনের বেড়া আঘাত করে ভাংচুর করে। একই সময় সাক্ষী রুবেল হাওলাদার, গনি মল্লিক ও তার ভাই মোঃ শহিদ মোল্লার বাড়ির সামনের বেড়াতেও হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ২৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এর আগে ১২ নভেম্বর মনির, মজিবর মোল্লা ও মিজানুর মোল্লাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় জিডি নং-৪৯৩ দায়ের করেছিলেন তাসলিমা বেগম।
এ ঘটনায় রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী রাসেল ও শহিদ মোল্লার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, তারা নিয়মিত ভয়ভীতি, রাতের বেলা বাড়িতে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও মানহানিকর প্রচারণার শিকার হচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী আসমা বেগম জানান, তার দুই ভাই ও মামা প্রবাসে থাকেন। বাড়িতে তাদের মা, ভাবি ও মামী বাচ্চাদের নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী মজিবর মোল্লার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। কিছুদিন আগে মজিবরদের বাড়িতে পারিবারিক ঝগড়া হলে স্থানীয় নারী সদস্যরা বিষয়টি দেখতে গেলেও ঘটনায় জড়িত না থাকা সত্ত্বেও পরবর্তীতে একটি সংবাদপত্রে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যা তাদের মানহানি করেছে।
আসমা বেগম জানান, মজিবর কিছুদিন আগে তার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা ধার চান। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মজিবর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে এবং পরে রাত ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তার মায়ের ঘরের সামনে টিনের বেড়ায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে পরিবারটি নলছিটি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে বলেও তিনি জানান।
অভিযুক্ত মজিবর মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনা দুটির পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি-দুই পরিবারের ওপর চলমান হামলা, ভয়ভীতি ও হয়রানির ঘটনার সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা হোক।