
ত্রিড়া ডেস্ক // শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে দিনের সূচনা করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তার পথ ধরে দ্বিতীয় টেস্টে এক বছরেরও বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন লিটন দাস। দুজন অভিজ্ঞ ব্যাটারের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৭৬ রান।
চলমান ম্যাচের শুরু থেকেই নজর ছিল মুশফিকের ওপর। তবে নিজেকে আড়ালে রাখেননি লিটনও। সাদা বলের চেয়ে লাল বলের ক্রিকেটে বরাবরই ধারাবাহিক তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শততম ম্যাচ খেলার পরদিনই বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সেঞ্চুরি তুলে নিজের মাইলফলককে আরও উজ্জ্বল করলেন।
লিটনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ সেঞ্চুরি ছিল গত বছরের আগস্টে-রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৮ রানের ইনিংস। প্রায় ১৪ মাস পর খরা ভেঙে টেস্টে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ১৬০ বলের ইনিংসে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৭ চার ও ২ ছক্কা।
মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস ব্যক্তিগত রেকর্ড তো গড়েছেন–ই। একইসঙ্গে তাদের দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৪৭৬ রান সংগ্রহ করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, আয়ারল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফাইফার (৫ উইকেট) পেয়েছেন স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল ৪ উইকেটে ২৯২ রান করেছিল। আজ (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আগেরদিন ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিক। বিশ্বের মাত্র ১১তম ব্যাটার হিসেবে তিনি শততম মাইলফলক ম্যাচ সেঞ্চুরিতে রাঙিয়েছেন। মুশফিক ১০৬ রানের থামার পর লিটনের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি থেমেছে ১২৮ রানে। এ ছাড়া মুমিনুল হক ৬৩ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ৪৭ রান।
বাংলাদেশ ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে মাত্র তৃতীয় দেশ হিসেবে টেস্টের একই ইনিংসে ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়ে। এর আগে কেবল ভারত (১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এবং পাকিস্তান (২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) একই কীর্তি গড়েছিল। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে মুশফিক-মুমিনুলের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০৭, মুশফিক-লিটনের পঞ্চম উইকেটে ১০৮ এবং লিটন-মিরাজের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২৩ রান পায় বাংলাদেশ।

মুশফিক-লিটন বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ সপ্তমবার একশ’র বেশি রানের জুটি গড়লেন। যার ভিতটা তারা গড়েন গতকাল প্রথম দিনে। দলীয় রানের খাতায় ১৮ রান যোগ করতেই মুশফিককে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ম্যাথু হামপ্রিস। ২১৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৫টি চারের সাহায্যে। মুশফিক বাংলাদেশের হয়ে (মুমিনুলের সঙ্গে) যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১৩তম সেঞ্চুরি করেছেন। এরপর জুটি গড়েন লিটন-মিরাজ। গত বছরের আগস্টের পর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। গ্যাভিন হোয়ের বলে ক্যাচ তুলে মিরাজের (৪৭) বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি।
এরপর লিটনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন তিনি, হাম্প্রিসের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। ১৯২ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় থামলেন ১২৮ রানে। শেষ দিকে ক্যামিও খেলেছেন এবাদত। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান করে তিনি অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশ অলআউট হয় ৪৭৬ রানে।
আইরিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট শিকার করেছেন অভিজ্ঞ স্পিনার ম্যাকব্রাইন। এ ছাড়া ম্যাথু হাম্প্রিস ও গ্যাভিন হোয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।