
গাজী আরিফুর রহমান, বরিশাল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দেশের কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রণোদনা কার্যক্রম বাস্তবায়নের সময় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও হয়রানি তাদের কাজের গতি ব্যাহত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা কৃষি অফিসার শাহারিয়ার মোরসলিম মেহেদীর ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে বরিশালে বিসিএস কৃষি অ্যাসোসিয়েশন, বরিশাল অঞ্চল–এর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রণোদনা কর্মসূচি সরকারের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা প্রায়ই রাজনৈতিক চাপ ও হস্তক্ষেপের মুখে পড়েন।
একজন কর্মকর্তা বলেন, “প্রণোদনা বণ্টন নিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব এখন উদ্বেগজনক। তালিকা প্রণয়ন থেকে অনুমোদন-সব জায়গায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা থাকে। এতে প্রকৃত কৃষক বঞ্চিত হন, আর কর্মকর্তারা হয়রানির শিকার হন।”

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “নকলা উপজেলা কৃষি অফিসার শাহারিয়ার মোরসলিম মেহেদীর ওপর হামলা কৃষি খাতে রাজনৈতিক প্রভাবের চরম বহিঃপ্রকাশ। এই ঘটনা কেবল একজন কর্মকর্তার ওপর হামলা নয়, এটি কৃষি উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সুশাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।”
বক্তারা আরও বলেন, প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দিন-রাত কাজ করছেন। অথচ যারা কৃষির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছেন, তারাই আজ রাজনৈতিক হেনস্তা ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন-এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
“কৃষিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নীতিমালা প্রয়োজন” দাবি করে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা বলেন, “প্রণোদনা কার্যক্রম বাস্তবায়নের নীতিমালা আরও কঠোর করতে হবে। তাদের ভাষায়, কৃষি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনভাবে কাজের নিশ্চয়তা না থাকলে কৃষির উন্নয়ন থেমে যাবে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জরুরি।”
মানববন্ধনে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মচারী এবং ডিএই–এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
বক্তারা বিসিএস কৃষি অ্যাসোসিয়েশন, বরিশাল অঞ্চলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এই উদ্যোগের মাধ্যমে ডিএই পরিবারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাত্ম প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। কৃষির মর্যাদা ও কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা রক্ষায় এই ঐক্যই হবে আমাদের শক্তি।”