নিজস্ব প্রতিবেদক // আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজ ৭৮তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে (২৮ সেপ্টেম্বর) তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
গত প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকাকালে সাধারণত শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে থাকতেন তার জন্মদিনে। সেখানেই নেতাকর্মীদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটতেন। পাশাপাশি দেশে আওয়ামী লীগ পালন করত নানা অনুষ্ঠান। তবে এবারের জন্মদিনের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা।
আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর একটি পোস্ট দিয়ে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন পালনে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
জন্মদিন উপলক্ষে দেশের সব মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা,গির্জায় তাঁর দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা এবং দেশবাসীর জীবনে চলমান দুর্যোগ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দোয়া, মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে বলেও পোস্টে ঘোষণা করা হয়।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বড় সন্তান। তিনি ঢাকার আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। তিনি সেখানে অবস্থানকালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার পরিস্থিতি না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরেরই ১৭ মে ছয় বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। টানা চার মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি ‘স্বৈরাচারী’ শাসকের খেতাব পান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।