অনলাইন ডেস্ক // পবিত্র রমজানে এ বছর বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তবে অস্বস্তি চাল ও তেলে। আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
দেখা গেছে, আগের চড়া দরেই স্থিতিশীল মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম। তবে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। ২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।
এছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও, চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছেন না দোকানীরা।
চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে কয়েকদফা বেড়েছে চালের দাম। এই সময় কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে।
রাজধানীর খিলক্ষেত, কারওয়ানবাজার, নয়াবাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানের আগে থেকে চড়ে থাকা শসা, লেবু ও বেগুনের দাম কমতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে প্রতি হালি লেবু ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হলেও সেটি চলতি সপ্তাহে দাম কমে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। কমেছে বেগুনের দামও। মান ও জাতভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। আর প্রতিকেজি শসা ও ক্ষিরাই বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩০-৪০ টাকা টাকায়।
এছাড়া ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়। আর ৩০ টাকা কেজিতে কমে সোনালি মুরগি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকায়। এছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, রোজার কারণে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা অনেক কম। বেচাকেনা কম থাকায় দামও কমতির দিকে। এমন পরিস্থিতি থাকলে রমজানে দাম আর বাড়বে না।
বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০-১২৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলু ও পেঁয়াজের দাম আগের থেকে কম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে আলু ও পেঁয়াজের মৌসুম থাকায় সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। এ কারণে দাম কম।
তবে বেশ কয়েক সপ্তাহ উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকার পর, আবারও দামের আঁচ লেগেছে মাছ বাজারে। বেশিরভাগ মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। নদীর মাছের দাম বেড়েছে আরও বেশি। সাড়ে ৪শ’ টাকা কেজির নীচে মিলছে না বড় আকারের চাষের রুই-কাতলা। এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেজির নীচে মিলছে না চিংড়ি। মাঝারি আকারের প্রতি কেজি আইড়, বোয়ালের জন্য দিতে হবে ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ও শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছর রোজায় শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম চড়ে থাকলেও এবার অনেকটাই স্বস্তি মিলছে বাজারে। ভোজ্যতেল, বেগুন ও লেবু বাদে প্রতিটি পণ্যের দামই কমতির দিকে। এভাবে সারাবছর থাকলে স্বস্তি ফিরবে বাজারে।
মোটাদাগে বলতে গেলে, এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগে বাজারে যে অরাজকতা থাকে এবার তা দেখা যায়নি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।