তিনি বলেন, ‘শেষ রাতে সমু চৌধুরীকে তার খালাতো ভাই অপুর কাছে হস্তান্তর করেছি। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের কয়েকজন সঙ্গে ছিলেন।’
এদিকে ঢাকায় ফিরেই একটি আবেগঘন সিদ্ধান্ত নেন সমু চৌধুরী। তিনি সরাসরি যশোরে মায়ের কাছে ফিরে যান। দীর্ঘদিন পর মায়ের কোলে ফিরেই যেন সব গুঞ্জন, বিভ্রান্তি ও ক্লান্তি ভুলে শান্তির পরশ খুঁজে পান এই প্রিয় অভিনেতা।
আজ শুক্রবার সকালেই তিনি যশোরে পৌঁছান বলে অভিনেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অভিনয়শিল্পী সংঘ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, একজন শিল্পীকে ঘিরে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানো অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিব্রতকর। ভবিষ্যতে গুজব থেকে বিরত থাকতে গণমাধ্যম ও জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে সমু চৌধুরীর সুস্থতা এবং শিল্পে তার আরও দীপ্ত পথচলার কামনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গফরগাঁওয়ের একটি মাজারে অবস্থানকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই অভিনেতা সমু চৌধুরীকে নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা, যা দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ছবি ভাইরালের জেরে অনেকেই ধরে নেন, এই গুণী অভিনেতা হয়তো মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দিনভর দুশ্চিন্তা ছড়ায় ভক্ত ও সহকর্মীদের মধ্যে।
তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার হতে থাকে ঘটনার আসল রূপ। সমু চৌধুরী নিজেই জানান, তিনি প্রায়ই দেশের বিভিন্ন মাজারে ঘুরতে যান। এবারও বুধবার রাতে তিনি গফরগাঁওয়ের ওই মাজারে যান। সঙ্গে অতিরিক্ত পোশাক না থাকায় বৃহস্পতিবার সকালে নিজের পরিহিত জামা-কাপড় ধুয়ে দেন এবং গামছা পরে মাজারের গাবগাছের নিচে বিশ্রাম করছিলেন। সেসময় তার কিছু ছবি কে বা কারা তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, যা থেকেই মূলত ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত।
অভিনয়শিল্পী সংঘ এ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। প্রথমে স্থানীয় একজন সহকর্মীকে মাজারে পাঠানো হয়। এরপর সংগঠনের দুই নেতা সুজাত শিমুল ও জুলফিকার চঞ্চল পরিবার সদস্যদের আগেই সেখানে পৌঁছান। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় সবকিছু সুষ্ঠুভাবে সমাধান হয়।পরে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে যখন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সমু চৌধুরী নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসিমুখে ঢাকায় ফেরেন।
নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশন নাটকে দর্শক মাতিয়েছিলেন এই মঞ্চ অভিনেতা। মাঝে অভিমান করে অভিনয় ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে গিয়েছিলেন। পরে শিল্পী ঐক্য জোটের মাধ্যমে আবারও অভিনয়ে ফিরে আসেন।
নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী। ১৯৯৫ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘আদরের সন্তান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর ‘দোলন চাঁপা’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘দেশ দরদী’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘যাবি কই’, ‘সুন্দরী বধূ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন।