1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. thelabpoint2022@gmail.com : Rifat Hossain : Rifat Hossain
ইতালি যাত্রা : লিবিয়ার জেলে গৌরনদীর ৩৮ যুবক - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

ইতালি যাত্রা : লিবিয়ার জেলে গৌরনদীর ৩৮ যুবক

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩৯ 0 বার সংবাদি দেখেছে

গৌরনদী প্রতিনিধি // ইউরোপে স্বপ্নের জীবনের খোঁজে লিবিয়ার উপকূল বেনগাজী থেকে সাগরপথে গেমিং বোর্ডে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন বরিশালের ৩৮ জন যুবক। গত এগারোদিন থেকে তাদের কোন সন্ধান না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম হতাশা ও কান্নার রোল পরে যায়। অবশেষে তাদের সন্ধান মিলেছে লিবিয়ার জেলখানায়। নিখোঁজের পর দালাল চক্রের বিভিন্ন এজেন্টদের সাথে যোগাযোগের করে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইতালি প্রবাসী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের জামাল মোল্লার ছেলে জাকির হোসেন মোল্লা। তিনি আরও জানিয়েছেন-এজেন্টরা তাকে জানিয়েছেন একইদিন রাতে ওই ৩৮ জনের গেমিং বোর্ডের পাশাপাশি লিবিয়ার উপকূল বেনগাজী থেকে আরেকটি গেমিং বোর্ডে থাকা ৩২ জন বাংলাদেশীকেও আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওই ৩৮ জনের সাথে জাকির হোসেনের স্বজনও রয়েছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লিবিয়ার কারাগারে থাকা অসংখ্য যুবকদের স্বজনরা জানিয়েছেন-বিভিন্ন মাধ্যমে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৩৮ জন যুবক ইউরোপে স্বপ্নের জীবনের খোঁজে চলতি বছরের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে ওমরা হজ ভিসায় প্রথমে সৌদি আরবে গমন করেন। সেখান থেকে তারা দালাল সিন্ডিকেটের এজেন্টদের মাধ্যমে চোরাই পথে লিবিয়ায় গমন করেন। পরবর্তীতে চলতি মাসের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব যুবকরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। এরপর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সূত্রমতে, প্রত্যেক যুবক তাদের সহায় সম্ভল বিক্রিসহ ধারদেনা করে ১৫ লাখ টাকা করে তুলে দিয়েছেন দালাল সিন্ডিকেটের হাতে। তবে এসব যুবকরা সবাই অবৈধভাবে গেমিং বোর্ডে ইতালি যাওয়ার জন্যই এ টাকা তুলে দিয়েছেন বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন। পরবর্তীতে দালাল সিন্ডিকেটের এজেন্টদের দেখানো পথে চলতি মাসের ৯ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার সময় রাত একটার দিকে বেনগাজী উপকূল থেকে গেমিং বোর্ডে সাগরপথে ওই ৩৮ জন যুবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। পথিমধ্যে ওই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে গেমিং বোর্ডটি আটক হয়। ফলে ইউরোপে স্বপ্নের জীবনের খোঁজে রওয়ানা হওয়া ৩৮ জন যুবকের ভাগ্য লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে রূপ নিয়েছে চরম দুঃস্বপ্নে। অপরদিকে গত এগারোদিন থেকে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরায় ওই ৩৮ জন যুবক বেঁছে আছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম হতাশা ও কান্নার রোল পরে যায়। অবশেষে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইতালি প্রবাসী গৌরনদীর খাঞ্জাপুর গ্রামের জাকির হোসেন মোল্লার ফোনের পর এসব পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হয়েছেন তাদের সন্তানরা লিবিয়ার জেলে বন্দিদশায় রয়েছেন। জাকির হোসেনের বোন তানিয়া আক্তার জানিয়েছেন-তার ভাই (জাকির) বিভিন্ন দালাল এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ করে নিখোঁজ ওই ৩৮ যুবকের কারাগারে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি (জাকির) যেকোন উপায়ে সকলকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য সিন্ডিকেটের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলেও তানিয়া উল্লেখ করেন। কারণ ওই ৩৮ জনের সাথে তাদের (জাকির) নিকট স্বজনরাও রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে গেমিং বোর্ডে আটকের পর কারাগারে থাকা ৩৮ জন যুবকদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন-বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম, রহিম হাওলাদার, মো. অহিদুল হাওলাদার, সুজন খান, সবুজ মোল্লা, বড় দুলালী গ্রামের রাহুল সরদার, শাহ আলী বয়াতী, বাবুল বেপারী, তানভির হোসেন হৃদয়, মাসুদ তালুকদার, রাব্বী সরদার, রিয়াজুল বেপারী, বিপুল সরকার, শাহাদাত সিকদার, মো. রিমন মীর, তৌহিদ হাসান হৃদয়, উত্তর বাউরগাতী গ্রামের ফাহিম প্যাদা, ইব্রাহীম প্যাদা, শামিম সরদার, তাঁরাকুপি গ্রামের মুন্না বয়াতী, উত্তর মাদ্রা গ্রামের শান্ত দত্ত, বাঙ্গিলা গ্রামের সুমন কাজী, খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব ডুমুরিয়া গ্রামের কামরুল বেপারী, ছোট ডুমুরিয়া গ্রামের মেহেদী হোসেন খান, পশ্চিম ডুমুরিয়ার বাবুল মোল্লা, পূর্ব সমরসিংহ গ্রামের আবুবক্কর মোল্লা, উত্তর মাগুরার সাদ্দাম বেপারী, আগৈলঝাড়ার আলী হোসেন বেপারী, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার সজিব বেপারী ও কালকিনির ফারহান হোসেন জয়। আটক এক যুবকের বিধবা মা নাজমা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন-আমার ছেলে বলেছিল মা জীবনে অনেক কস্ট করেছো, আর কষ্ট করতে হবেনা। এখন আমার বুকের মানিক কোথায় আছে, কেমন আছে জানিনা। অনেক কস্ট করে সহায় সম্ভল বিক্রিসহ ধারদেনা করে ছেলে তার স্বপ্নপূরণ করতে চেয়েছিলো।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Comments are closed.

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ