আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই, সেগুলো শরীরের তাপ উৎপাদনে কাজ করে। হজম প্রক্রিয়ার সময় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় শরীরে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। খাবারগুলো ভেঙে যায়। এভাবে আমরা শরীরে শক্তি পাই। এ সময় শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু গরম খাবারের পরিবর্তে ঠাণ্ডা খাবার খাই, তবে শীত অনুভব করি। কিন্তু গরম খাবার খাওয়ার পরেও যেসব কারণে এমন হতে পারে:
পানির স্বল্পতা
পানি পান বিপাক বাড়ায়। ফলে দেহ উষ্ণ থাকে। পানি স্বল্পতার কারণে মুখ শুকিয়া আসা, বাথরুমে কম যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। সারাদিন মাস্ক পরে থাকলে কম পানি পানের প্রবণতা থাকে। তাই দেহের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে বেশি করে পানি পান করা প্রয়োজন। গরম বা শীতকাল দুই সময়েই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। এতে দেহ আর্দ্র ও সুস্থ থাকবে।
রক্তাস্বল্পতা
অ্যানিমিয়া হলে শরীরে রক্ত কণিকার অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা কম থাকে। শরীরের চাহিদা পূরণের জন্যও রক্ত কণিকা থাকে অপর্যাপ্ত। অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডা অনুভব করতে পারে।
কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেলে
পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালোরি শরীরে শক্তি উৎপাদন ও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেলে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকে। সেই সঙ্গে অপর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
না খেয়ে থাকলে
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করে এবং শরীরকে চাপের মধ্যে রাখে। ফলে ঠাণ্ডা অনুভব হয়।
কম ওজন
অতিরিক্ত কম ওজন দেহের প্রয়োজনীয় চর্বির ঘাটতি নির্দেশ করে। সেক্ষেত্রে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে বলে। পর্যাপ্ত পুষ্টির ঘাটতি দেহের বিপাক হ্রাস করে। ফলে পর্যাপ্ত তাপ উৎপাদন হয় না। ওজন কম হওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অনিয়মিত মাসিক চক্র, ক্লান্তি বোধ, মাথা ঘোরা, বা বিএমআই ১৮’র কম থাকা। দেহের ওজন ঠিক রাখতে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে। এতে শরীর সুস্থ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকস
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে খাবার খাওয়ার পরে ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণে
খাবার হজমে ভূমিকা রাখে থাইরয়েড হরমোন। থাইরয়েড হরমোন পরিপাক ক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে। যার ফলে শরীর যে তাপ উৎপন্ন করে, তা হ্রাস পায়। এই জন্য খাওয়ার পরে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।