1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. ukbanglatv21@gmail.com : Kawsar Ahmed : Kawsar Ahmed
গোপালগঞ্জের সঙ্গে ৫ জেলার নৌ চলাচল বন্ধ - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরনাম :

গোপালগঞ্জের সঙ্গে ৫ জেলার নৌ চলাচল বন্ধ

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ 0 বার সংবাদি দেখেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: গোপালগঞ্জ সদরে মধুমতি নদীর মানিকহার সেতুর নীচে কচুরিপানার স্তুপ জমা হওয়ায় নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এতে পাঁচটি জেলার সঙ্গে নদীপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

 

গত ১৫ দিন ধরে এ অবস্থার কারণে বাগেরহাট, পিরোজপুর, নড়াইল, বরিশাল ও খুলনায় খাদ্য, নির্মাণ সামগ্রী, জ্বালানি, কৃষি পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী পরিবহণ ব্যাহত হচ্ছে। তাই কচুরিপানার স্তুপ পরিষ্কার করে নৌ-পথ সচল করতে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

শুক্রবার বিকালে উপজেলার উরফি ইউনিয়নের মানিকহার ব্রিজ এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ছয় ভাগে ছয় গুচ্ছ পিলারের মাধ্যমে মধুমতি নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। প্রতিটি গুচ্ছে ফাঁকা ফাঁকা ছয়টি করে মোট ৩৬টি পিলার রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ সেট পিলারের অবস্থান নদীর পানিতে।

 

এসব পিলারের ফাঁকে ফাঁকে কচুরিপানা ঢুকে আটকে গেছে। জমতে জমতে তা স্তুপে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের নিচ থেকে স্তুপগুলো বিস্তৃতি লাভ করেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায়।

 

বিশাল এ এলাকায় শুধু কচুরিপানা আর কচুরিপানা। চলাচল করতে না পেরে নদীতে নোঙ্গর করে আছে অসংখ্য নৌকা, ট্রলার ও কার্গো।

 

ব্রিজ সংলগ্ন মানিকহার হাটে বসে কথা হয় বরিশালের সবজি চারা ব্যবসায়ী শাওন মোল্লার (৩৫) সঙ্গে। তিনি বরিশাল ও পিরোজপুর থেকে নৌকায় করে লাউ, কুমড়া, সিম, বেগুন ফুলকপি, বাধাকপিসহ বিভিন্ন সবজির চারা এনে গোপালগঞ্জে বিক্রি করেন।

 

তিনি বলেন, “এখন শীতের সবজির চারা বিক্রির ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু কচুরিপানার কারণে নৌকা গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের গ্রামের হাট বাজারে নিতে পারছি না। এতে ব্যবসার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আমি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।”

 

স্থানীয় উরফি গ্রামের গাজী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “এ নদী দিয়ে আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য, নির্মাণ সামগ্রী কম খরচে পরিবহন করতে পারি।

 

“গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এক ট্রাক পণ্য পরিবহনে গড়ে ১০ হাজার খরচ হলেও ট্রলারে লাগে ১২ হাজার। কিন্তু ট্রাকের চেয়ে ট্রলারে অন্তত তিন গুণ বেশি পণ্য নেওয়া যায়। ফলে পণ্য পরিবহনে খরচ কমে যায় কমপক্ষে আড়াইগুণ।”

 

কিন্তু নদীতে কচুরির স্তুপ জমে যাওয়ায় তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম ব্যাহত হচ্ছে। পণ্য বাজারজাত করতে পারছেন না বললেন তিনি।

 

কার্গো চালক বশির মিয়া (৪৫) বলেন, “এই নদী দিয়ে আমরা ধান, চালসহ বিভিন্ন পণ্য খুলনা ও বরিশালে পরিবহন করি। কিন্তু মানিকহার ব্রিজের নীচে জমা কচুরিপানার স্তুপের ওপর দিয়ে কার্গো চালাতে পারছি না।

 

“তাই মানিকহার ঘাটে কার্গো নোঙ্গর করে বসে আছি। এতে আমাদের জীবন-জীবিকা অচল হয়ে পড়েছে। আমাদের জীবিকা সচল রাখতে দ্রুত কচুরিপানা পরিস্কার করার দাবি জানাচ্ছি। “

 

উরফি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মিজানুর রহমান বলেন, “গুচ্ছ পিলারের উপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে পিলারের ফাঁকে ফাঁকে কচুরি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি করে। এমনকি কচুরির স্তুপের উপর দিয়ে এখানে ঘুরতে আসা উৎসুক জনতা চলাচলও করেন।

 

“দুই বছর আগেও এ অবস্থা হয়েছিল। তখন সরকারি উদ্যোগে এটি অপসারণ করা হয়। এখন আবার একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এত নৌপথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।”

 

 

 

উরফি ইউপির চেয়ারম্যান মনির গাজী বলেন, “জেলার প্রধান নদী মধুমতি দিয়ে পাঁচ জেলায় প্রতিদিন অন্তত ২শ’ নৌকা, ট্রলার, কার্গোসহ বিভিন্ন ধরণের নৌযান চলাচল করে। কিন্তু কচুরিপানার কারণে ১৫ দিন ধরে নৌ পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পণ্য পরিবহন ও নৌচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ব্রিজেরও ক্ষতি হচ্ছে।

 

“বিষয়টি ভিডিও করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীনকে পাঠাই। তিনি বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।”

 

জনস্বার্থে কচুরিপানার স্তুপ অপসারণ করে দ্রুত নৌ চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাত জামিল বলেন, “বিষয়টি আমি লিখিত ও মৌখিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কচুরি অপসারণে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার প্রয়োজন। টাকা বরাদ্দ বা অনুমোদন পেলেই আমরা এটি শুরু করতে পারব।”

 

কাজ শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই সব কচুরিপানা অপসারণ করা সম্ভব হবে বলে জানান ওই প্রকৌশলী।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Comments are closed.

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ