নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৮নং চর গোপালপুর ইউনিয়নে ভূমিহীনদের জন্য বানানো সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর টাকার বিনিময় সচ্ছল ব্যক্তিদেরকে দেয়া ও ঘর দিয়েও ঘরের দলিল না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো: শামসুল বারী মনিরের বিরুদ্ধে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চর গোপালপুর ইউনিয়নের মুজিববর্ষ আশ্রয়ণ ৯ নং ওয়ার্ড (পূর্বকাজিরচর ) গ্রামটি তেতুলিয়া নদীর ভাঙনের কারণে বিলীন হয়ে যায়। এরপর আবার জেগে উঠে। সেখানে ঘর-বাড়ি ও জমি-জমা হারানো মানুষ ঐ চরে বসবাস শুরু করে। ইউনিয়নটিতে ভূমিহীনদের জন্য প্রথম ধাপে ৩০ টি ও দ্বিতীয় ধাপে ১৭০ টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভূমিহীনদের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে গরু ছাগল বিক্রি করে হাজার হাজার টাকা তুলে দিলেও এখনো আমরা পাইনি ঘর ও ঘরের দলিল। আশ্রয়ন ঘরে বসবাসরত এক মহিলা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ৫০হাজার টাকা দিয়েছি ১বছর আগে কিন্তু এখনো দলিল দিচ্ছে না, আক্ষেপ করে বলেন আমরা গরীব মানুষ হয়ত ঘরের দলিল দিক আর না হলে আমাদের টাকা ফেরত দিক। ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের দাবি, মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বরাদ্দ হওয়া ঘর বিক্রি হয়েছে। অথচ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য এসব ঘর বিনামূল্যে বরাদ্দ করেছেন। উক্ত মুজিববর্ষ আশ্রয়ণ ৯ নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যান টাকার বিনিময়ে আমাকে ঘর দিয়েছে। বিনামূল্যের ঘরের টাকা কেন দিলেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টাকা না দিলেতো ঘর দিবে না তাই আমি কার্যালয়ে গিয়ে ৩৫হাজার টাকা দিয়েছি। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর দিয়েছে শুনে অনেক ভাল লাগছে কিন্তু আমরা তো জেলে গরীর মানুষ টাকাও নাই, ঘরও নাই! তারপরও ৪০হাজার টাকা কষ্টমষ্ট করে দিয়ে থাকতেছি, যেহেতু দলিল নাই কবে যে নামিয়ে দেয় সেই চিন্তায় আছি। উক্ত আশ্রয়নের এক মুরব্বী বলেন, প্রথমে ২০হাজার এরপর ১২হাজার আবার ১০হাজার আবার সাড়ে ৫হাজার আবার মাটি ফালানোর জন্য দিছি ১৫০০ আবার লেট্রিনের জন্য ১৫০০ টাকা দিয়েও ঘরের দলিল পাচ্ছি না, আমি যদি মরে যাই তাহলে আমার তো একটা নাতী আছে তার কি হবে, দলিল দিলে না হয় নাতীর নামে করতাম। সত্যি কথা কইতে গেলে তো ভাত নাই এমন কথা বলে আরেকজন মহিলা বলেন, ৩ ধাপে ৪৫হাজার টাকা দিয়েও ঘর পাচ্ছি না। টিউবওয়েল, লেট্রিন, মাটি ফালানো ইত্যাদি বাবদও অনেক টাকা নিয়েছে তিনি। এমন অভিযোগ মুজিববর্ষ আশ্রয়ণ ৯ নং ওয়ার্ড (পূর্বকাজিরচর ) একাধিক মানুষের। নাম পরিচয় কেন বলতে চাচ্ছেন না, জানতে চাইলে বলেন, পরে যদি চেয়ারম্যান এসে আমাগো ক্ষতি করে তাই। তবে এই বিষয় ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো: শামসুল বারী মনির বলেন, ঘরতো আমি একা দেয়নি, ইউএনও, ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বাছাই করে দিয়েছে। আল্লাহর রহমতে আমার অনেক সম্পত্তি আছে, কার কাছ থেকে ঐসব টাকা নিয়েছি বলুন আমিও চাই সত্য বের হয়ে আসুক। সামনে চেয়ারম্যান নির্বাচন তাই অনেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।