নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে কীর্তনখোলা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই মো. আসাদুল আল গালিব জানিয়েছেন।
দুই সন্তানের জননী ওই নারীর নাম আলো মজুমদার (৩৭)। তিনি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের কন্যা। তার স্বামী অনুপ রায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই মো. আসাদুল আল গালিব জানান, সোমবার রাতে বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এমভি সুন্দরবন ১৬ লঞ্চ। রাতে খবর পেয়েছেন, লঞ্চ থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে।
সকালে খবর পান, কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুর কাঠি এলাকায় এক নারীর মরদেহ ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তারা গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন। সেখানে এসে স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেছেন।
এসআই গালিব আরও জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই নারীর ভাই মঞ্জু মজুমদার জানান, আলো মজুমদার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন।
নগরের কাশিপুর পাসপোর্ট অফিসের পাশে এক ভাড়া বাসায় থাকতেন। সোমবার সকালে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করার কথা বলে বের হন। তারপর তার কোনো সন্ধান ছিল না। এ ঘটনায় মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার জানিয়েছেন, মৃত আলো রানী মজুমদারের বড় বোন মঞ্জু রানী মজুমদার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সেখানে তিনি মৃত আলো রানী মজুমদার মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং ওইদিন সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ বলে উল্লেখ করেন।
ডিজির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে আজ মঙ্গলবার জানতে পারেন, ওই নারীর মরদেহ কীর্তনখোলা নদীতে পাওয়া গেছে। তদন্ত ছাড়া নেপথ্যের ঘটনা সম্পর্কে কেউ বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গতদিন মধ্যরাতে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে বলে ফেসবুকে লাইভ করেন এক যাত্রী। লঞ্চ থামিয়ে খোঁজ করেও ওই নারীকে উদ্ধার করা যায়নি।
সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের কেরানি মো. বাবুল বলেন, রাত ১১টার দিকে লঞ্চ বামনীচর এলাকা অতিক্রমকালে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দেন। ডেকের যাত্রী ওই নারীকে দুই ঘণ্টা ধরে খোঁজ করা হয়। পরে না পেয়ে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে জানিয়ে লঞ্চ ঢাকা চলে যায়।
বরিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, ৯৯৯-এ ফোনকল করায় খবর পেয়ে আজ সকালে সেখানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর মরদেহ দুপুরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। তবে প্রাথমিকভাবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।