বনানী (ঢাকা) প্রতিনিধি // সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ছাত্রদলের নেতাকর্মী দ্বারা হট্টগোল ও নারী হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ আছে, তিতুমীর ঐক্যের কমিটিতে নিজেদের নাম অন্তর্ভূক্ত করতেই জোরপূর্বক কমিটি বিলুপ্ত করেছে ছাত্রদলের সেই পক্ষটি।
জানা গেছে, ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে গঠিত সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের নেতৃত্ব নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
তিতুমীর ঐক্যের সহযোগী সদস্য রায়হান বলেন, মেহেদী, আলামিন, লাকি এবং আরও অনেকে আমাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে। তারা তিতুমীর ঐক্যের কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি তোলে এবং চাপ প্রয়োগ করে আমাদের থেকে লিখিত নেয়। পুরনো, অব্যবহৃত প্যাডে তারা রাব্বি ভাই, আমিনুল, মাহমুদ ভাই, আমিনুল ও রাশেদের সাক্ষর নিয়ে জোরপূর্বক কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা করায়। এরপর রাশেদ ভাইয়ের থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও করিয়ে নেওয়া হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এড়াতে আমরা তখন কিছু বলিনি। তবে ভিডিও দেখলেই বোঝা যাবে কারা এর সঙ্গে জড়িত।
ঘটনার সময় ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিক আল-আমিন ও খন্দকার মাহফুজুল ইসলাম হিমেলের উপর নুরুল আমিনসহ বেশ কয়েকজন চড়াও হয়। পরে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিতুমীর ঐক্যের বাকবিতণ্ডা। তিতুমীর ঐক্যের কমিটি স্থগিত।’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়।
এই ভিডিও প্রকাশের জেরে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ ছাত্রদল নেতা আব্দুল হামিদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহিন আরমান হৃদয় এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আল-আমিনসহ তাদের অনুসারীরা সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত হন।
তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জানালায় ঘুষি ও দরজায় লাথি মেরে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে এবং উগ্র আচরণ শুরু করে। এক নারী সাংবাদিক তখন ভিডিও ধারণের চেষ্টা করলে আনুমানিক ১০-১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে জেরা করে এবং তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক জিয়াদ হাওলাদার ও তার সাথীরা ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করে।
পরে জাবেদ ইকবাল ও আব্দুল হামিদ সাংবাদিকদের কাছে ভিডিও প্রকাশের কারণ জানতে চান এবং উত্তেজিত নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে আলোচনার একপর্যায়ে তারা হট্টগোল সৃষ্টি করেন এবং সাংবাদিক সমিতির পেজে প্রকাশিত ভিডিওর ক্যাপশন পরিবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
তিতুমীর ঐক্যের কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম জানান, ‘তিতুমীর ঐক্য’ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছে, আন্দোলন করেছে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে আমরা শিক্ষার্থীদের কথাগুলো রাষ্ট্রের কাছে উত্থাপন করেছি। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা আজ ‘তাহাবন্দ’ কর্মসূচি পালন করতে সকাল দশটায় ক্যাম্পাসে ঐক্যবদ্ধ হই। কিন্তু একপর্যায়ে ছাত্রদলের নামধারী কিছু শিক্ষার্থী ‘তিতুমীর ঐক্য ’এর আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে উঠে পড়ে লাগে। তারা আমাদের ওপর জোর দেখিয়ে তিতুমীর ঐক্যের কমিটিগুলো স্থগিত করতে বাধ্য করে এবং বিষয়গুলো নিয়ে জোরপূর্বক প্রেস ব্রিফিং করতে বাধ্য করে।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম বলেন, তারা রানিং কমিটির কেউ নয়। কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক কি ব্যবস্থা নেয়।