
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি // দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে উপকূলেএক মণ্ডপে দুই শ’রও বেশি প্রতিমা ও বিগ্রহ তৈরি করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার এক মন্দিরে। গত বছরও এই মন্দিরে এমন আয়োজনে লাখ লাখ ভক্ত-পূজারী-দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল।
চিতলমারী উপজেলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পূর্বে চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া গ্রামের চণ্ডীভিটা সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরে আসন্ন দুর্গাপূজার এই বিশাল আয়োজন চলছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় দুর্গাপূজা ঘিরে নিরাপত্তার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে মন্দির কমিটি।
মন্দির কমিটি জানায়, সনাতনদের ধর্মগ্রন্থ বেদ-পূরাণ-চণ্ডী, রামায়ণ-মহাভারত, গদ্মপূরাণ-গীতা থেকে শুরু করে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, শ্রীহরি-গুরুচাঁদ অবধি নানা গ্রন্থের দেব-দেবী, সাধক-মনীষীসহ পৌরাণিক কাহিনী তুলে ধরা হবে এসব প্রতিমা-বিগ্রহে। তাঁদের মতে, প্রতিমা মানে দেব-দেবী, আর বিগ্রহ মানে দেব-দেবীর বাহন। যেমন দেবী শ্রী দুর্গার বাহন সিংহ, মহিসাসুরের বাহন মহিষ, কার্তিকের বাহন ময়ূর, গণেশের বাহন ইঁদুর ইত্যাদি।
প্রতিমা ও বিগ্রহ নির্মাণে দায়িত্বরত ভাস্কর্যশিল্পী কিশোর বিশ্বাস জানান, পাঁচজন শিল্পীকে নিয়ে তিন মাস ধরে মূর্তিগুলো তৈরি করছেন তিনি।
১৭১টি দেব-দেবীর মূর্তি ও তাদের বাহন মিলিয়ে মোট সংখ্যা হবে দুই শ’র বেশি। আশা করছি আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর এই প্রতিমা-বিগ্রহের কাজ শেষ হবে।
মন্দির কমিটির উপদেষ্টা মোংলা বন্দর পরিচালক ও যুগ্ম সচিব কালাচাঁদ সিংহ জানান, চণ্ডীচরণ নামের এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত ভিটায় চণ্ডীভিটা সর্বজনীন মন্দির প্রতিষ্ঠিত। এখানে প্রায় ৬৪ বছর আগে থেকে দুর্গাপূজা হয়।
গত বছর এখানে ১০৮টি প্রতিমা বিগ্রহ তৈরি করে দুর্গাপূজার আয়োজন করায় গোটা জেলাব্যাপী সাড়া পড়ে। লাখ লাখ ভক্ত-পূজারী-দর্শনার্থীর ভিড় জমে। মেলা বসে মাঠজুড়ে। গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল।
কালাচাঁদ সিংহ বলেন, গতবার থেকে এবার প্রতিমা-বিগ্রহের সংখ্যা বেড়ে দুই শ’র বেশি করা হয়েছে।
আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব হবে। নিরাপত্তার জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবা ও সিসি ক্যামেরা থাকবে। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করি এবং সবাইকে আসন্ন শ্রী শ্রী দুর্গাপূজায় অগ্রিম আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
প্রতিবছরের মতো এবারও চিতলমারীতে ১৫১টি মন্দিরে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।