উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে // নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে খাবার বিতরণ নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সাবেক এক নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা শেষে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাতে এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আ.লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। দলীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ওই স্মরণসভা হয়। স্মরণসভা শেষে তবারক বিতরণের সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক শেখ বোরহান আহমেদের সঙ্গে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি রিয়াজ আহমেদের (৩৫) তর্ক হয়।
একপর্যায়ে দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ নেতা–কর্মী তখন চলে গেলেও প্রয়াত সিদ্দিক আহমেদের স্ত্রী নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম পলাশ, জেলা আ.লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আলমগীর সিদ্দিকী, নড়াইল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মলয় কুমার কুণ্ডুসহ কয়েকজন নেতা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় শেখ বোরহান আহমেদ (৩৬) ও রিয়াজ আহমেদ (৩৮) ছাড়াও আহত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী তওহিদুর রহমান (৪০), ফারুক হোসেন (৪০) ও নাহিদুজ্জামান (৩৫)। নাহিদুজ্জামানের বাড়ি পৌর এলাকার চরেরঘাট, অন্যরা শহরের ভওয়াখালী এলাকার বাসিন্দা। শেখ বোরহান আহমেদ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত রিয়াজ আহমেদ বলছেন, শেখ বোরহান আহমেদ কাছে তবারক ছিল। তা বিতরণ করা নিয়ে তাঁর সঙ্গে তাঁদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে বোরহানের লোকজন তাঁদের ওপর ছুরি ও লাঠি নিয়ে হামলা করেন। এতে তাঁরা চারজন আহত হন। শেখ বোরহান আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তাঁর পক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন ব্যক্তি জানান, বিতরণ শেষে বোরহানের কাছে ১০ প্যাকেট তবারক ছিল। এটা রিয়াজরা নিতে চান। বোরহান তখন তাঁদের বলেন, এগুলো আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে পাঠানো হবে। এ নিয়ে তর্ক হয়। বোরহানকে তাঁরা মারধর করতে করতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে নিয়ে যান। এ সময়ে বোরহানের পক্ষের কিছু ছেলেপেলে ওই চারজনকে মারধর করে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, এটা তুচ্ছ একটি ঘটনা। তেমন কিছু হয়নি। পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, কার্যালয়ের নিচে শোরগোল শুনে সেখানে যাই। তাদের নিবৃত্ত করি।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (চলতি দায়িত্বে) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, স্মরণসভা শেষে খাবার বিতরণ নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে মারামারি হয়। এতে এক পক্ষের একজন, অন্য পক্ষের চারজন আহত হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
Leave a Reply