মো:রাকিব জোমাদ্দার কুয়াকাটা // উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ উপকূলজুড়ে বিরাজ করছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া। সমুদ্র এখন উত্তাল। ফলে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরের মধ্যে পায়রাসহ সকলকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত দুই দিন ধরে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় থেমে থেমে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও বুধবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কুয়াকাটা সৈকতের আশপাশের এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই আবহাওয়ায় পর্যটকদের উপস্থিতি কমে গেছে। বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলোকে পায়রা উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। গভীর সমুদ্রের জেলেরা অনেকেই ফিরে এসেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় নোঙর করে রাখা ট্রলারগুলোতে এখন বিরাজ করছে অস্থিরতা। মহিপুরের জেলে রফিক মিয়া বলেন, “সমুদ্রে যাইতে প্রস্তুতি নিছিলাম, এখন বৃষ্টি ও সতর্ক সংকেত শুনে ট্রলার ঘুইরা আনি। এই সময়ে ঝড় উঠলে ট্রলার নিয়া বিপদে পড়ি।” পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত কার্যকর রেখেছে। বন্দরে চলাচলকারী জাহাজ ও ছোট নৌযানগুলোকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ও উপকূলীয় থানাগুলোতে সতর্ক অবস্থান বজায় রাখতে বলা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও মৎস্য অফিসগুলোকে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অমাবস্যার কারণে কুয়াকাটা উপকূলে নদ-নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। বেশ কিছু নিচু এলাকায় ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের অনেক পরিবার ইতোমধ্যে তাদের গবাদিপশু ও নৌযান নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলেছে। আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, “লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এতে দক্ষিণাঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও, সজাগ থাকতে হবে।” আগামী ৭২ ঘণ্টায় বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকছে। পটুয়াখালী উপকূলে লঘুচাপের প্রভাব কিছুটা স্থিতিশীল হলেও এর পরিণতি হতে পারে জটিল, বিশেষ করে মৎস্যজীবী ও উপকূলের বাসিন্দাদের জন্য। কুয়াকাটা থেকে শুরু করে পায়রা বন্দর পর্যন্ত সমুদ্রপারে অবস্থানরত সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও আবহাওয়া বিভাগ