প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত সরকারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গত ২ মার্চ সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়। সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই দেশের সব উপজেলায় প্রাথমিকের শিশুদের জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে কিনা, তা জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবেদন সংগ্রহের পরামর্শ দেয় কমিটি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। এতে এ পর্যন্ত ৫৪টি জেলার তথ্য পাওয়া গেছে। এ তথ্য বিশ্নেষণে দেখা যায়, ৫৪ জেলার ৫৪ হাজার ৫১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যবহার উপযোগী ওয়াশ ব্লক আছে ১৯ হাজার ৮১৬টিতে। ব্যবহার উপযোগী টয়লেট আছে ৩৯ হাজার ৯৬৮টিতে। ৪ হাজার ৯৫১টিতে ওয়াশ ব্লক বা টয়লেট কিছুই নেই। নলকূপ বা পানির উৎস নেই ৬ হাজার ৩৭টিতে। সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রয়েছে ৫৪ হাজার ২৭টিতে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ৫১ হাজার ৬২০টি স্কুলে।
এদিকে চলতি বছরের মে মাসে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্ধেকের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মৌলিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ভাষ্য অনুযায়ী, স্যানিটেশন ব্যবস্থা বলতে মানব দেহের বর্জ্য নিরাপদ নিস্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা এবং সুবিধার উপস্থিতিকে বোঝায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌলিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার অনুপস্থিতি শিশুর নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে পয়ঃনিষ্কাশন ও মৌলিক পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় মৌলিক এসব সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল থেকে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
Leave a Reply