সরকারি চাকরি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বরিশাল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্টার অসীম কল্লোল। ঢাকায় এবং বরিশালে তিনটি ফ্লাট, সরকারি খাস জমিতে পাঁচতলা ভবন, নামে-বেনামে ক্রয় করেছেন কোটি কোটি টাকার জমি।
সাব রেজিস্ট্রারের এত টাকার উৎস খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, রেজিষ্ট্রি অফিসে চলে ঘুষের খেলা। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে ঋণ এবং ব্যবসা সম্পদের উৎস দাবী করেছেন অভিযুক্ত সাব রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোল। অপরদিকে এ বিষয়ে দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্টার অসীম কল্লোল তার চাকরির ৩৪ বছরে গড়েছেন ঢাকায় দুইটি ফ্লাট, নগরীর পোর্ট রোড এলাকার সরকারি খাস জমিতে করেছেন পাঁচতলা ভবন। নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকার অগ্রণী হাউজিং লিমিটেডের ড্রিম প্যালেসে কিনেছেন কোটি টাকার ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং- ৩-অ)। এ ছাড়া সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদে ১ একর ২৫ শতক জমিতে স্ত্রীর নামে করেছেন সোনার বাংলা মৎস্য খামার ও এগ্রো ফার্ম।
শহরতলীর কাগাসুরা মুকুন্দপট্টি রাস্তার দুই পাশে ৮০ শতক জমি কিনে করেছেন সুগন্ধা এগ্রো এ- ফিশারিজ। একই এলাকার কাগাসুরা বাজারের পাশে একশ’ শতক জমি কিনে তার ওপর করেছেন মালটা বাগান।
নগরীর ৪নম্বর ওয়ার্ডে ক্রয় করেছেন ১২ শতকের প্লট ও লাকুটিয়া বাজার এলাকায় ২০ শতক জমির ওপর করেছেন সুগন্ধা পোল্ট্রি খামার। এ ছাড়া তালতলী বাজারে স্ত্রীর নামে রয়েছে ইট, বালু ও রড সিমেন্টের দোকান। নিজের, স্ত্রীর ও ছেলের নামে রয়েছে প্রচুর সম্পদ।
সূত্রমতে, চাকরির সুবাদে যখন যেখানে বদলি হয়েছেন সেখানেই সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোল ক্রয় করেছেন জমি ও ফ্লাট। তার সব সম্পত্তির পরিমাণ কয়েকশ’ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাই একজন সাব-রেজিস্ট্রারের এত সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখার দাবি করেছেন সচেতন বরিশালবাসী।
সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, একজন সাব-রেজিস্ট্রার হয়ে এত বিশালাকার জমি কিভাবে ক্রয় করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। দেশে এখন সবকিছুই সম্ভব, আর যা কিছু অবৈধ উপায়ে হচ্ছে তা কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই করছেন। এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণে সরকারকে অনেক সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
কাগাসুরা বাজার এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোলের মালটা বাগান দেখভালের জন্য একজন লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাঝে মাঝে সাব-রেজিস্ট্রার এখানে এসে ঘুরে যান। এছাড়াও এই এলাকায় তার আরও কয়েকটি বিশালাকার প্লট রয়েছে।