1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. thelabpoint2022@gmail.com : Rifat Hossain : Rifat Hossain
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূল এখন অনিরাপদ: সুন্দরবনে জলোচ্ছ্বাসে বিপর্যস্ত জীববৈচিত্র্য - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরনাম :
বজ্রপাতরোধে গৌরনদীতে বিনামূল্যে তালচারা-কীটনাশক বিতরন অনুষ্ঠান বানারীপাড়ার ত্যাগী নেতা আব্দুস সালাম: এক জীবন্ত ইতিহাস মেহেন্দিগঞ্জে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা সমন্বয় কমিটি গঠন! ফেব্রুয়ারির নির্বাচনেই গণতন্ত্রে ফিরবে দেশ: মির্জা ফখরুল পঞ্চগড়ে সন্তানের গলায় ছুরি ধরে মাকে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪ অর্থ নয়, চিকিৎসা সহযোগিতা চান ফরিদা পারভীনের পরিবার বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও হরিণ শিকার চলছেই: দুই মাসে আটক ৭৬, জব্দ ৫৩ ট্রলার  বাগেরহাটে কলকলিয়া-মায়েরখালী সেতু: এক যুগ ধরে মৃত্যু ফাঁদে শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ নড়াইলে স্ত্রীসহ ডাকাত সর্দার গ্রেফতার ভিয়েনার কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান নয়ন কে লালমোহনে বিশেষ সংবর্ধনা

 বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূল এখন অনিরাপদ: সুন্দরবনে জলোচ্ছ্বাসে বিপর্যস্ত জীববৈচিত্র্য

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫
  • ২৭ 0 বার সংবাদি দেখেছে

এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির // বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূল অনিরাপদ হয়ে পড়ছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। জলবায়ু পরিবর্তন, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উচ্চ জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও মনুষ্যসৃষ্ট দূষণসহ নানা ধরনের সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাদাবন (ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট) সুন্দরবন ও বনের জীববৈচিত্র্যকে।
সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাসে ১৩৪টি মৃত হরিণ ও চারটি বন্য শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, সুন্দরবন বন বিভাগের মতে, বন্যপ্রাণী মৃতের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি হবে। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের পর বঙ্গবন্ধুর চর, পুটনির চরসহ গহীন সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন বন এলাকায় বন বিভাগের কর্মীরা যেতে পারেনি।
তাদের মতে, গত ২৬ মে ভোরে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর চর, পুটনির চরসহ সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর অংশে ২০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। এতে বহু হরিণ সাগরে ভেসে গেছে। যার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওগুলো পচে-গলে পানিতে মিশে গেছে। উদ্ধার করা মৃত বন্যপ্রাণীগুলো মূলত-সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীর চর, জ্ঞানপাড়া, শেলার চর এবং বিভিন্ন নদী-খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এর আগে ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর একটি বাঘ ও ২৭টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এছাড়া ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর তিনটি হরিণ ও একটি বন্য শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রাণীর মৃত্যুর কোনো খতিয়ান নেই।
বনজীবীরা জানান, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে এবারই ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালার চেয়ে বন্যপ্রাণীর ক্ষতি বেশি হয়েছে।
বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার কর্মকর্তা মফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, এবারের ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের গাছপালার চেয়ে পশুপাখির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। সুন্দরবনের যেসব জায়গা উঁচু তা সর্বোচ্চ আট ফুট। অথচ সেখানে পানি উঠেছিল ১০-১২ ফুট। টানা ৩৬-৩৭ ঘণ্টা পুরো সুন্দরবন লবণপানির নিচে ছিল। এর আগে এ রকম জলোচ্ছ্বাস সুন্দরবনে কখনো হয়নি। যা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির বিষয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাণী বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম এ আজিজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে এখন যে অভিঘাত হচ্ছে, এগুলো ধীরে ধীরে বাড়বে। উচ্চ জলোচ্ছ্বাস ছাড়াও আমরা যে অসুবিধাগুলো দেখছি, সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা অঞ্চলের সুন্দরবন। সাতক্ষীরা থেকে মান্দারবাড়ী হয়ে দুবলারচর, কটকা পর্যন্ত অনেক এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। এটা সুন্দরবনের জন্য দৃশ্যমান ক্ষতি হচ্ছে। ঐ অঞ্চলে ভেঙে গিয়ে বন কমে যাচ্ছে। তবে সুন্দরবনের বলেশ্বরের দিকে কিছু কিছু চর জাগছে। সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় গত ১০-১২ বছর ধরে ভাঙন অনেক বেশি হচ্ছে। এই ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি এবং ধীরে ধীরে এই ক্ষতি বাড়ছে। হয়তো এখন ক্ষতিটা অত নজরে আসছে না; নজরে আসে যখন ঘূর্ণিঝড়ের মতো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় তখন।
তিনি বলেন, গত ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখি, দীর্ঘ সময় ধরে সুন্দরবন জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে থাকা এবারই প্রথম দেখা গেল। জলবায়ুর যে অভিঘাতগুলো আনপ্রেডিক্টেবল (অপ্রত্যাশিত)। যা আমরা আগে থেকে প্রেডিক্ট (প্রত্যাশা) করতে পারি না। ফলে বাঘ ও বন্যপ্রাণীসহ জলজ প্রাণীরও ক্ষতি হচ্ছে। কারণ লবণাক্ততা বাড়ছে।
সুন্দরবনের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আগের তুলনায় ধীরে ধীরে প্রকট হচ্ছে। জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই এবার উচ্চ জলোচ্ছ্বাস হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। স্বাভাবিক জোয়ারের সময় এখন পানি অনেক উঁচু হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এবারই প্রথম সুন্দরবন একটানা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা লোনাপানিতে প্লাবিত ছিল, যা আমরা আগে ধারণাও করতে পারিনি। সুন্দরবনে এবারের দুর্যোগ আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় কী করা যায়, তা নিয়ে আমরা ভাবছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Comments are closed.

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ