নিজস্ব প্রতিবেদক // আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভোলায় দেশীয় পদ্ধতিতে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। তবে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় পশুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে তারা কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন।
খামারিরা জানিয়েছেন, উপকূলীয় এই দ্বীপ জেলায় গরু, মহিষ ও ছাগল পালনে কোনো ধরনের স্টেরয়েড বা রাসায়নিক ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় না। কোরবানিতে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা পশুর চাহিদা সব সময়ই বেশি। তাই লাভ কম হলেও তারা এই পদ্ধতিতেই গরু মোটাতাজা করছেন।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ছোট আলগী গ্রামে ‘ঐকতান এগ্রো’ নামের খামারে দেখা যায়, মালিক মো. ওসমান গনী নিজেই গরুগুলোকে কাঁচা ঘাস খাওয়াচ্ছেন। তিনি প্রায় সাত বছর ধরে চরাঞ্চল থেকে গরু কিনে এনে দেশীয় উপায়ে মোটাতাজাকরণ করে আসছেন। খামারে বর্তমানে রয়েছে ২৬টি গরু, এর মধ্যে ২২টি মাংসের ও ৪টি দুধের গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘ইসলামেও কৃত্রিম উপায়ে পশু মোটাতাজাকরণ নিষেধ। আমি ৩২০ শতাংশ জমিতে ঘাস চাষ করে গোখাদ্যের ব্যবস্থা করেছি। ভুট্টা, গম, সয়াবিন, কুড়া ও চিটাগুড় দিয়েই গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে।’ গত বছর ২২টি গরু বিক্রি করে প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা লাভ করেন তিনি। এবারও ভালো বিক্রির আশায় রয়েছেন।
ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধের দাবি
স্থানীয় খামারিরা দাবি তুলেছেন, যেন কোরবানির আগে ভারতীয় গরু আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এতে দেশীয় খামারিরা ন্যায্য দাম পাবেন।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তদারকি ও চাহিদা
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান জানান, ‘ভোলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৬৯টি, যেখানে চাহিদা প্রায় ৯০ হাজার ২৫৩টি। অনলাইনেও কোরবানির পশু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত তদারকি চলছে। পশুর হাট ও খামারে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। কোথাও অসুস্থ পশু পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
ক্রেতাদের আস্থা দেশি গরুতে
ভোলার শহরের যুগীরঘোল এলাকার কাইয়ুম মামুন ও মো. ইদ্রিস বলেন, ‘আমরা সব সময় দেশি গরু দিয়েই কোরবানি করি। এবারও দেশি গরু কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।