নিজস্ব প্রতিবেদক // ভোলায় বাস শ্রমিকদের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পাঁচটি অটোরিকশা ও একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ভাঙচুর করা হয়েছে ২০টি অটোরিকশা ও দুটি বাস। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বাস মালিক সমিতি ও অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোলা সদর পৌরসভা থেকে চলতি বছর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডের ইজারা নেয় বাস মালিক সমিতি। বাসস্ট্যান্ডের অভ্যন্তরে থাকা অটোরিকশা চালকদের বাসস্ট্যান্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এ সময় সিএনজি চাকদের বাসস্ট্যান্ডের ভেতর থেকে বেরিয়ে অন্যত্র যেতে বলা হয়। কিন্তু সিএনজি চালকরা পৌর কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে বাসস্ট্যান্ড থেকে বের হননি। এ নিয়ে সন্ধ্যায় বাস মালিক সমিতি ও বাসের শ্রমিকদের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
এ সময় পাঁচটি অটোরিকশা ও একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় ২০টি অটোরিকশা ও দুটি বাস। অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে দমকল বাহিনী। একই সময়ে পুলিশ নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে বাস টার্মিনালের দুই পাশে দুই পক্ষের শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে মুখোমুখি থাকায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় বাস শ্রমিক ও অটোরিকশাচালকরা একে অপরকে দায়ী করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বলেন, ‘পৌর সভার নির্দেশ অনুযায়ী অটোরিকশা মালিকদের আমরা বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা সরিয়ে নিতে বলেছি। এ কারণে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে বাসে আগুন দেয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’
সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘এ ঘটনা বাস সমিতির পরিকল্পিত। আগে বাস সরিয়ে নিয়ে আমাদের অটোরিকশায় তারা আগুন দেয়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে ডাকাডাকি করার পরও তারা গেট বন্ধ করে দেয়। আমাদের অটোরিকশার আগুন নেভায়নি তারা।’
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সরকার বরিশালটাইমসকে জানান, ‘বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা সরিয়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে। দুই পক্ষের ভুল বোঝাবুঝি ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কতজন আহত হয়েছে, তা আমার জানা নেই। তবে কিছু বাস ও অটোরিকশায় আগুন দেওয়া হয়েছে।’