নিজস্ব প্রতিবেদক // আখেরি মোনাজাতে মুসলিম বিশ্ব উম্মাহর শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো চরমোনাই মাদ্রাসা ময়দানে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অগ্রহায়ণের মাহফিল। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় সমাপনী অধিবেশন ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিলের সমাপ্তি ঘোষণা করেন চরমোনাইয়ের পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম।
অধিবেশনে তিনি বলেন, মানুষ আজ তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভুলে গেছে, অহরহ নাফরমানি করছে। অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মতো মনে করতে হবে। সুতরাং তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই, ওই মানুষ এমনকি আলেম, মুফতি ও পিরের কোনো মূল্য নেই।
তিনি আরও বলেন, নিজেকে নিজের ছোট মনে করতে হবে, আমিত্ব ভাব ও তাকাব্বুরি পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে, সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে কলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গীবতের মতো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য হতে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালিমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। সহিহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।
আখেরি বয়ানের পর পির সাহেব চরমোনাই বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি মুরিদদের সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। অতঃপর তিনি তওবা করিয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার শপথ বাক্যপাঠ করান।
আখেরি মোনাজাতে পির সাহেব চরমোনাই ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করেন।
জানা গেছে, মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ২৭ নভেম্বর রাত ১১টায় খুলনার মৃত ইজহার আলীর ছেলে মো. আলতাফ হোসেন (৬৫) এবং একই দিন রাত ১০টায় রাজধানী ঢাকার রায়েরবাগের সালামত উল্লাহর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৬৩) মৃত্যুবরণ করেন। উভয়ের জানাজা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
চরমোনাই অস্থায়ী মাহফিল হাসপাতালে এ বছর প্রায় দুই সহস্রাধিক মুসল্লির চিকিৎসা দেওয়া হয়। এবারের মাহফিলে চারজন অমুসলিম পির সাহেব চরমোনাই ও শায়খে চরমোনাইর হাতে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন, এমনটি জানিয়েছেন পিরের কর্মীরা।