
নিউজ ডেস্ক।।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে মেঘনা ও অন্যান্য শাখা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মেহেন্দিগঞ্জের বিস্তীর্ণ জনপথ প্লাবিত হয়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, পুকুর, মাছের ঘের, ফসল, পানের বরজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের মেঘনার তীর ঘেষা আলিগঞ্জ টু উলানিয়া নতুন নির্মাণাধীন ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে
চার লেনের রাস্তাটি। বর্তমানে সম্পূর্ণ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অধিক জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার মেঘনার জোয়ারের প্রভাবে নির্মাণাধীন রাস্তাটির ১০টি স্থানে বিশাল বিশাল খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ইউনিয়ন বিএনপির সহযোগিতায় ধসে পড়া রাস্তার উপর দিয়েই কয়েকটি সাকো তৈরি করা হচ্ছে। আপদকালীন চলাচলের জন্য এই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এই রাস্তাটি দিয়ে ৫/৬ টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজারের অধিক লোক প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাটবাজারে যাতায়াত করেন।
এছাড়া নৌপথে ঢাকা, চট্রগ্রাম, ভোলা, লক্ষীপুর, চাদপুর, বরিশালে যাতায়াত করতে হলে উলানিয়া লঞ্চঘাটে যাবার একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। অপরিকল্পিত ভাবে এই রাস্তাটির নির্মান কাজ হওয়ায় এভাবে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে ধসে পড়ার জন্য দায়ী করেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গাইড ওয়াল ছাড়া এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাস্তা নির্মাণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
পরিকল্পনা ছাড়া সরকারের কোটি টাকার প্রকল্প এভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া উদ্বেগজনক করেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আকবর চৌধুরী।
তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নতুন করে পরিকল্পনা নিয়ে রাস্তাটি আবারো নির্মান কাজ শুরু করতে আহবান জানান।
অপরদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াজ চৌধূরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, তিনি এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় কোনো রকম চলাচলের জন্য বেশ কয়েকটি সাকো তৈরি করে যাচ্ছেন। সাময়িক চলাচলের জন্য এর বিকল্প ছিলোনা। তবে আগামি পূর্ণিমার আগেই যদি নির্মানাধীন রাস্তাটি নতুন করে পরিকল্পনা নিয়ে নির্মাণ করা না হয়, তাহলে পূর্ণিমার জোয়ারে আবারো প্লাবিত হয়ে পুরো রাস্তাটিই ধসে পড়তে পারে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শুরু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিকট আবেদন জানিয়েছে।
অপর দিকে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদুল হক মিল্টন চৌধুরী জানান, মেঘনা নদীর তীরবর্তী কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই রাস্তাটির দুই পাশে গাইডওয়াল না থাকায় জোয়ারের পানিতে এভাবে রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় ধসে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের নিকট তিনি দাবী জানান, আগে গাইডওয়াল তৈরি করুন, তারপর রাস্তা নির্মান করতে হবে। আর সেটা করা না হলে সরকারি কয়েক কোটি টাকা শুধুই মেঘনার জলে ভেসে যাবে। এতে করে সরকারের পাশাপাশি এলাকার জনগন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্মাণাধীন চার লেনের রাস্তাটি ধসে পড়ার বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুর রহমান জানান, উপজেলা প্রকৌশলীকে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি পরিদর্শন করে বিস্তারিত উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। তারাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে পড়া রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ করে জনগনের কস্ট লাগবে এগিয়ে আসবেন।