নিজস্ব প্রতিবেদক।।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে রোববার দুপুর আনুমানিক ২টার সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। এতে ৬জন আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয় যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ কর্মী। এরা সাংসদ পংকজ নাথ’র মতের বিরোধী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুসারী। সংবাদ পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে। হাসপাতাল এবং স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, হাপাতালে চিকিৎসাধীন রিমানসহ অন্যান্যদে রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে ওই হামলার ঘটনা ঘেটে। রোববার দুপুর ২ দিকে ২৫-৩০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাসপাতালে হামলা চালায়।
পরে পুলিশ চলে আসায় তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। জানাগেছে, স্থানীয় সাংসদ পংকজ নাথ’র অনুসারী বিএনপি জোট সরকার আমলের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাস পোস্ট মাষ্টার এর উপর হামলা মামলার আসামি কাউন্সিলর এস এম শাহাজাহান সোহেল মোল্লার নেতৃত্বে এই হামলা চালায়। আহতরা জানান, ঘটনার দিন দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় অভিযুক্ত সোহেল মোল্লাসহ তার লোকজন রাজনৈতিক আদিপত্ত্য বিস্তার করার লক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী রিমান নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ধরে নিয়ে ব্যপক মারধর করে। এক পর্যায়ে সে গুরুত্বর আহত হলে তাকে পাতারহাট বাজারের চাউলা পট্টি ফেলে রেখে চলে যায় হামলাকারীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিলে ২য় দফায় চিকিৎসকদের সামনে রিমানসহ ৬-৭ জনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় দায়িত্বরত সহকারী মেডিকেল অফিসার শাকিলা ইশরাত আতংকিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অন্যানরা হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়। হামলায় হাসপাতালের নেবু লাইজার মেশিন, টেবিল ফ্যান, বালতি, কাপ পিরিচসহ অনেক আসবাপত্র ভাংচুর করে হামলাকারীরা। হাসপাতালসহ গোটা এলাকায় আতংক বিরাজ করে। ঘটনার খবর পেয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরুন্নবী এবং থানা অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ জানায়, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামরাকারীরা পালিয়ে গেছে। হামলাকারীদের পুলিশ খুঁজছে। আহতরা হলেন, মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে উপজেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক মোঃ মামুন (২৮), মোঃ মহসীনের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী রিমান(১৯), মোঃ দুলালের ছেলে আব্দুল্লাহ(২২) , মোঃ নান্নুর ছেলে ইমরান(২২), শাহিন সিকদারের ছেলে মেহেদী হাসান জিহাদ(১৮)। আহতদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার আগের দিন রাতে যুবলীগ সদস্য রিয়াদ খানের অফিসও ভাঙচুর করে ওই হামলাকারীরা। এদিকে এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশদ আলম ভুলু জানান, যাদের ওপর হামলা হয়েছে , ওরা সবাই ছাত্রদলের লোক। শুধু মামুন যুবলীগের। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জানান, এডভোকেট মুন্সুর আহমেদ জানান, মুলত পঙ্কজ অনুসারীদের কাজই হচ্ছে স্থানীয় প্রকৃত আওয়ামী লীগের সাথে যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের দমন করা। তা না হলে ছাত্রলীগ কর্মী ও যুবলীগ নেতাদের ওপর এভাবে হামলা চালানো রাজনৈতিক কর্মকান্ড নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুন্নবী জানান, সরকারী হাসপাতালে এমন কর্মকান্ড কখনোই কাম্য নয়। ঘটনায় যারা জড়িত সিসি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এ ঘটনায় পংকজ অনুসারী কাউন্সিলর সোহেল মোল্লাকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা পংকজ নাথ’র কী হবে—এ প্রশ্ন এখন অনেকের মুখে। পংকজ নাথ’র অনুসারীরা মেহেন্দিগঞ্জে ৮-১০ টি খুনসহ একের পর হামলা মামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
Leave a Reply