1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. ukbanglatv21@gmail.com : Kawsar Ahmed : Kawsar Ahmed
মেয়ের মৃত্যু নিয়ে জামাই’র বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাট - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন

মেয়ের মৃত্যু নিয়ে জামাই’র বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাট

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২
  • ৩০০ 0 বার সংবাদি দেখেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশালের উজিরপুরে রুবি আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে নিহতের স্বজনদের বিরুদ্ধে শ্বশুরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি স্থানীয় থানা পুলিশের সদস্যদের সম্মুখেও দিনে দুপুরে আসামিদের ঘরে লুটপাট-ভাঙচুর চালিয়েছে নিহত গৃহবধূর স্বজনরা অর্থাৎ বাদীপক্ষের লোকজন। ভুক্তভোগীদের দাবি, একদিকে বাদীপক্ষের লোকজনের হামলার ভয়, অন্যদিকে পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ি থেকে পুরুষরা পালিয়েছেন।

 

 

যার কারণে আসামি পক্ষের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রাতে তাদের অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। জানা গেছে, গৃহবধূ রুবি আক্তার বরাকোঠা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বরাকোঠা গ্রামের ওর্য়াকশপ ব্যবসায়ী মো. স্বপন বেপারীর স্ত্রী এবং একই উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হস্তিশুন্ড গ্রামের ব্যবসায়ী বজলু হাওলাদারের মেয়ে ছিলেন। তিনি দুই ছেলে সন্তানের জননী ছিলেন।

 

 

নিহত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী ও তাদের পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়ে তাদের মেয়েকে হত্যা করেছেন। এমন অভিযোগে নিহত রুবির বাবা বজলু হাওলাদার (৫৫) বাদী হয়ে মেয়ের জামাইসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত ২৭ জুলাই উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৃহবধূ রুবির মৃত্যুর পর থেকেই তার পরিবারের লোকজন দাবি তুলছেন, যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়ে রুবিকে হত্যা করেছে।

 

 

এই সংক্রান্তে রুবির মৃত্যুর কয়েকদিন পরে তার বাবা বজলু হাওলাদার বাদী হয়ে জেলা বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে গত ২১ জুলাই সংশ্লিষ্ট থানাকে মামলা রুজুর আদেশ দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে রুবির মৃত্যুর ঘটনায় উজিরপুর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের হয়েছে। ওই মামলার আসামিরা হলেন- নিহত রুবির স্বামী স্বপন বেপারী (৩২) ও তার বাবা মো. আকবর বেপারী (৬০), স্বপনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী শাহিনুর বেগম (৩৫) এবং ফুফাতো ভাই আ. ছালাম হাওলাদার (৩২)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১২ বছর আগে ২০১০ সালের ১৯ অক্টোবর রুবি আক্তারের সাথে উত্তর বড়াকোঠা গ্রামের স্বপন বেপারীর ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাঁদের সংসারে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এরই মধ্যে তাঁদের রাহাত (১০) আর রেদোয়ান (১) নামে দুই ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এরপর থেকে মামলার অন্য আসামিদের কুপরামর্শে স্বপন প্রায়ই যৌতুকের জন্য রুবিকে মারধর করেছে।

 

 

যা নিয়ে স্বপন ও তার স্বজনদের সাথে রুবির পরিবারের দীর্ঘদিন মামলা-মোকদ্দামা চলার একপর্যায়ে মিমাংসা হয়েছে। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন অর্থাৎ রুবির মৃত্যুর আগে মামলার আসামিরা রুবির নিকট ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। রুবি যৌতুক দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আসামিরা গলাটিপে শ্বাসরোধ করে রুবিকে হত্যা করে। এদিকে রুবির মরদেহ সুরতাহালকারী ও থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জানান, গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিসহ উর্ধ্বতনরা গত ১৩ জুলাই (বুধবার) সকালে উপজেলার উত্তর বড়াকোঠা গ্রামের স্বপনের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরের বারান্দা থেকে রুবির লাশ উদ্ধার করি। পরে লাশের প্রাথমিক সুরতাহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূ রুবির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এসআই আসাদুজ্জামান জানান, স্বপন বেপারীর বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক আছে- এমন অভিযোগে প্রায়ই স্ত্রী রুবির সঙ্গে স্বপনের ঝগড়া ও মারামারি হতো। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ-মীমাংসা করেছেন স্থানীয়রা।

 

 

এরই জের ধরে ১২ জুলাই রাতে রুবির সঙ্গে স্বপনের ঝগড়া হয়। এতে অভিমানে রুবি রাতের যে কোনো সময় নিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, নিহত রুবির লাশ সুরতাহাল করার সময় গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। অপরদিকে গত ৩০ জুলাই রোববার নিহত রুবির স্বামী স্বপনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের বাড়ি-ঘরের দরজা, জানালা ও টিনের বেড়া ভাঙচুর করা।

 

 

দুটি শোয়ার ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। বিছানাপত্র, চাল-ডাল মেঝেতে পড়ে আছে, ঘরের আলমিরার গøাস-কপাট ভাঙচুর করা, টিভি এবং রান্নাঘরের চুলা ভাঙাচুরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বপনের ঘরে বাদীপক্ষের লোকজন একাধিকবার হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এমনকি স্থানীয় থানা পুলিশের সদস্যদের সম্মুখেও দিনে দুপুরে আসামিদের ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে নিহত গৃহবধূ রুবির ভাই রাসেল ও তার দুই ফুফুসহ স্বজনরা। স্বপনের বৃদ্ধা মা ফুলবানু বেগম (৫৫) অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বপন আর রুবির ঘরে থাকা স্বর্ণের গহনা, নগদ টাকা-পয়সা ও দামি মালামাল যা আছিল, সব নিয়া গেছে। ঘরের বেড়া ভাঙচুর করছে। এমনকি রান্না করার চুলাটা পর্যন্ত ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে গেছে।

 

 

আর এসব দুই দুই বার করেছে। সবশেষ গত ২৮ জুলাই দুপুরে থানার দুই পুলিশ অফিসারের সামনেই রুবির ভাই রাসেল, ফুফু কুলসুম বেগম ও বিউটি বেগম ঘরে ঢুকে টিভিসহ অন্যান্য মালাপত্র ভাঙচুর করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে গেছে। ওদের ভয়ে রাত্রে বাইরে প্রসাব করতেও বের হই না। ঘরেই করা লাগে।’ আসামিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বাদী রুবির বাবা বজলু হাওলাদার বলেন, ‘আমার মেয়ে খুন হইছে, আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

 

 

কিন্তু তারা এখন নিজেরা বাঁচতে আমাদের বিরুদ্ধে ঘর-বাড়ি ভাঙচুরের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিন উদ্দিন বলেন, গৃহবধূ রুবি আত্মহত্যা করেছেন নাকি হত্যার শিকার হয়েছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। যদিও নিহতর পরিবার আদালতে অভিযোগ করায় আদালতের আদেশে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের উপস্থিতিতে মামলার আসামিদের বাড়ি-ঘরে বাদীপক্ষের লোকজন কর্তৃক ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে ওসি মমিন উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। আসামি পক্ষের লোকজন থেকে এমন অভিযোগ করলে সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ