প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিতর্কিত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কে হামলা হয়েছে। এ ঘটনার পরেই লেখককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত রুশদির সার্জারির পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
অ্যান্ড্রু ওয়াইলি নামে রুশদির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর রচয়িতা ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি একটি চোখ হারাতে পারেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘তার বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
পুলিশের হাতে আটক হাদি মাতারের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় হলেও তিনি নিউ জার্সিতে বসবাস করছিলেন। তার বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, রুশদির অবস্থা দেখে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হবে হাদির বিরুদ্ধে। হাদি মাতারের আগের রেকর্ড জানতে এবং হামলার উদ্দেশ্য বের করতে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহায়তা চেয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
নিউইয়র্ক পুলিশের মেজর ইউজিন স্ট্যানিসজেউস্কি বলেছেন, যদিও রুশদির ওপর হামলার কারণ এখনো অজানা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদির অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি শিয়া চরমপন্থি এবং ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রতি সহানুভূতিশীল। হাদির ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়েও তথ্য পেয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
নিউইয়র্কের শাটোকোয়া ইনস্টিটিউশনের গতকাল সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সালমান রুশদির ওপর হামলা চালান হাদি মাতার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুশদিকে ২০ সেকেন্ডে ১০ থেকে ১৫ বার ছুরিকাঘাত করা হয়। হামলার পর রুশদি তৎক্ষণাৎ মেঝেতে পড়ে যান। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে লেখককে ঘিরে ফেলেন। অনুষ্ঠানে আনুমানিক আড়াই হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।
হামলায় সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হেনরি রিসও মাথায় সামান্য আঘাত পেয়েছেন। রিস একটি অলাভজনক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা; যা নিপীড়নের হুমকির মধ্যে থাকা নির্বাসিত লেখকদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
সালমান রুশদি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-আমেরিকান ঔপন্যাসিক। তিনি ১৯৪৭ সালের ১৯ জুন মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তিকালে তিনি ব্রিটেনে চলে যান। সেখানেই তিনি স্কুল শিক্ষা শেষ করেন এবং কলেজ পাশ করেন। ২০০০ সাল থেকে রুশদি আমেরিকায় বসবাস করছেন। তার দ্বিতীয় উপন্যাস, মিডনাইটস চিলড্রেন, ১৯৮১ সালে বুকার পুরস্কার জেতে৷ তিনি বেশ কিছু দুর্দান্ত বই লিখলে তার চতুর্থ উপন্যাস, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বিতর্কের বিষয় হয়ে ওঠে।
Leave a Reply