সমস্যার কারণ : বিছানায় প্রস্রাব করার মূল কারণ হলো- এসব শিশুর মূত্রথলির স্ফিংটার অপরিপক্ব থাকে। এ ছাড়া টয়লেটের যথাযথ অভ্যাস গড়ে না ওঠা এবং বংশগত কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে। প্রস্রাবের সংক্রমণ, অতিরিক্ত শাসন ও অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকা শিশুদের মধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণেও মূত্রথলির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ায় বিছানায় প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস ও মানসিক প্রতিবন্ধিতা থেকেও অনেক শিশু বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলতে পারে।
কিছু শিশু দিনের বেলায়ও বিছানা ভিজিয়ে ফেলে। বিষয়টি সহজভাবে নেওয়া মোটেই ঠিক নয়। এর পেছনের কারণ, যেমন- প্রস্রাবের থলির স্নায়ু অসংবেদনশীলতা, জন্মগত কোনো ত্রুটি, যৌন অপব্যবহারের শিকার কিনা ইত্যাদি অনুসন্ধান করতে হবে। আবার স্বাভাবিক কারণেও প্রস্রাবের অতিরিক্ত বেগে শিশু বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলতে পারে। অবশ্য বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছর শতকরা ৫ জন শিশু এ সমস্যা থেকে এমনিতেই সেরে ওঠে।
সমস্যা দূর করা যায় যেভাবে : প্রথমে শিশু ও তার বাবা-মায়ের মধ্যে সমস্যাটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। বিছানা ভেজানোর জন্য শিশুকে কিছুতেই শাস্তি বা বকাবকি করা যাবে না। বিছানায় প্রস্রাবের পর তা শুকিয়ে গোছগাছ করে রাখলে শিশুর প্রশংসা করুন, আদর করুন। এতে তার মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হবে এবং ধীরে ধীরে সে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সফল হবে।
এ ক্ষেত্রে ‘নিউরেটিক অ্যালার্ম’ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই অ্যালার্মের সেন্সর শিশুটির প্যান্টের ভেতর দেওয়া থাকবে। ফলে ভিজলেই সেটা বেজে উঠবে আর তার ঘুম ভেঙে যাবে এবং সে বাথরুমে চলে যাবে। এই সমস্যা মোকাবিলায় কিছু ওষুধ রয়েছে, কিন্তু সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম কার্যকর। তবে আত্মীয় কিংবা অন্য কোথাও বেড়াতে গেলে কিছুদিনের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
বিছানা ভেজানোর সমস্যাটি মোটেই জটিল কোনও সমস্যা নয়। আপনা-আপনি সেরে যায়। প্রয়োজন যথাযথ টয়লেট ব্যবহারের অভ্যাস এবং শিশুকে মানসিক চাপমুক্ত রাখুন। অতিরিক্ত পানি পান অথবা একেবারেই কম পানি পানÑ দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা ভালো।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশুরোগ বিভাগ, হলি ফ্যামিলি
রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, মগবাজার, ঢাকা
চেম্বার : পপুলার ফার্মেসী, বড় মগবাজার, ঢাকা
০১৭১৫২৮৫৫৫৯