ফরিদপুরের যুবক মো. আবুল খায়ের। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে গরু লালনপালন করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ঘাস আর খড় জাতীয় সাধারণ খাবারে বড় করা তার গরুটির ওজন এখন প্রায় ১৮ মণ। গরুটির নাম দেওয়া হয়েছে লাল মানিক। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে অনেকে ভিড় করছেন গরুটি দেখতে। এবারের কোরবানির ঈদের বাজারে ৭ লাখ টাকা দামে এটি বিক্রির আশা মালিকের।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের হঠাৎ বাজারের পাশে চৌধুরীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়ের প্রবাস ফেরত যুবক। কয়েক বছর আগে দুবাই থেকে দেশে ফিরে নিজ গ্রামের বাজারে একটি সার ও কীটনাশকের দোকান দেন।
আবুল খায়ের বাড়িতে গড়ে তোলেন একটি ছোটখাটো গরুর খামার। চার বছর আগে তার খামারে ‘হীরা’ নামে একটি শাহীওয়াল জাতের গাভীর গর্ভে ব্রাহমা জাতীয় বীজ দিয়ে বকনা বাছুরের জন্ম হয়। আদর করে নাম রাখেন ‘লাল মানিক’। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে বাছুরটি নিজের সন্তানের মতো করে আদর যত্নে বড় করে তোলেন তিনি। চার বছরে তার গরুটি ৮ ফুট লম্বা, ৫ ফুট চওড়া আর বুকের প্রশস্ততা ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি হয়েছে।
গরুর মালিক আবুল খায়েরের মা রহিমা বেগম বলেন, ‘হীরার পেটে হইছিল বলে ওর নাম রাখছিলাম মানিক, লাল মানিক। গরুটা আমাদের অনেক আদরের।’
আবুল খায়েরের ভাই রাজিব হোসেন বলেন, আমাদের মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশীয় কায়দায় কাঁচা ঘাস আর খড়কুটো খাইয়ে এটি বড় করেছি। এলাকার লোকজন ছাড়াও বাইরে থেকে লোকজন আসে গরুটি দেখতে। সবাই গরুটি দেখে খুব খুশি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কাবীর বিন জাব্বার বলেন, গরুটি এই গ্রামের সেরা গরু। অনেক গরু দেখছি নানাভাবে ওষুধ আর কৃত্রিম খাবার দিয়ে মোটা করতে। এটি দেশি গরুর মতো, মাংসপেশি খুবই শক্তপোক্ত।
গরুর মালিক আবুল খায়ের বলেন, নিজের ছেলের মতো আদরযত্ন দিয়ে ওকে বড় করে তুলেছি। সকাল বেলা দোকানে আসার আগে ওকে খাবার খাইয়ে আসি। আবার দুপুরে গিয়ে ওর যত্ন করি। নিজ হাতে গোসল করিয়ে দিই। ওর খাবারের জন্য নিজের ক্ষেতে ঘাস চাষ করেছি। লাল মানিককে বড় করেছি একেবারেই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে। ওকে খাবার হিসেবে ক্ষেতের ঘাস আর খড় খাইয়েছি। কোনো কোম্পানির ফিড দিইনি। দেখতে খুবই আকর্ষণীয় লাগে। গরুটির দাম চেয়েছি ৭ লাখ টাকা। ভালো ক্রেতা হলে হয়ত সামান্য কিছু কমেও বেচতে পারি।
স্থানীয় গরুর ব্যাপারী মো. হাসান বলেন, গরুটি দেখে আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। গরুটিতে প্রায় ১৮ মণের বেশি মাংস হবে বলে আমার ধারণা। প্রাথমিকভাবে দামও বলেছি।