নিজস্ব প্রতিবেদক // সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সরকারি ভবনে সোলার প্যানেল বসানোর কাজটি বেসরকারি উদ্যোগে করা যায় কি না সে ব্যাপারে বিবেচনা করুন। যারা বসাবে তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই এটার রক্ষণাবেক্ষণ করবে, কার্যকরভাবে এটা পরিচালনা করবে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু ছাদটা দেওয়া হবে; বাকি কাজ তারাই করবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান রুফটপ সোলার করেছে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। তারা কী ধরনের সমস্যায় পড়েছে সেগুলো জানতে হবে। সেই সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে যেতে হবে।’’
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সকল সরকারি ভবন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম বসানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে না এবং সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ছাদগুলোর জন্য ভাড়া পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউবেল এনার্জি এজেন্সির (IRENA) ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে। ভারতে যেখানে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, সেখানে বাংলাদেশে এই হার মাত্র ৫.৬ শতাংশ।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন। এই লক্ষ্য অর্জনে ইতোমধ্যে ৫২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৫টি স্থলভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার শুরু হয়েছে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হতে পারে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।