আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলবর্তী সাগরে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা বাড়বে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। যদিও সাগরে ২২ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলছে।
এদিকে, সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় জোয়ারের পানির তোড়ে একটি বার্জের ধাক্কায় ইনানী সৈকতের নৌবাহিনীর জেটিটি ভেঙে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। জেটি ভেঙে যাওয়ায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণেও দেখা দিয়েছে আরেক বিপত্তি। সাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে কিছুটা উত্তাল রয়েছে সাগর।
গতকাল বুধবার রাত ২/৩ টার সময় ছিল পূর্ণ জোয়ার। এ সময় প্রচন্ড ঢেউয়ে জেটির সঙ্গে বাঁধা একটি ছোট বার্জের ধাক্কায় জেটিটি ভেঙে গেছে। শেখ হাসিনা সরকারের সময় ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌমহড়া অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী জেটিটি নির্মাণ করেছিল।
ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ব্যপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. সালাহউদ্দিন। ঝুকিপূর্ণ বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে জেলার সব উপজেলার সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সাগরে গোসল করার সময় সতর্ক থাকতে এবং পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
অপর দিকে, টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন বিকল্প নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল বুধবার বিকেলে নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট মালিক সমিতিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।