নিজস্ব প্রতিবেদক // দেশে সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২ হাজার ৭৩৩টি। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৩৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ১৯৬ জন। এসব দুর্ঘটনায় ৮৭ হাজার ৮৮৪ কোটি ১২ লাখ টাকার মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত সাড়ে ৫ বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮৭ হাজার ৮৮৪ কোটি ১২ লাখ টাকার মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এ সময় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২ হাজার ৭৩৩টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৩৮৪ জন এবং আহত ৫৩ হাজার ১৯৬ জন।
নিহতের মধ্যে নারী ৫,১০৩ (১৪.৪২ শতাংশ), শিশু ৪,৭৮৫ (১৩.৫২ শতাংশ)। ১১ হাজার ৬৬৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১১ হাজার ৫৯৩ জন, যা মোট নিহতের ৩২.৭৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৫.৬৪ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৩৫৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৩.৬২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ২৬১ জন, অর্থাৎ ১৪.৮৬ শতাংশ।
এই সময়ে ৫৮৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২১ জন নিহত, ৫৮২ জন আহত এবং ৩৬৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ১ হাজার ২২৮টি রেল দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪০৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৬৯ জন আহত হয়েছেন।
নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ও তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোয় ঘটছে এসব দুর্ঘটনা।
এছাড়া দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণেও।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২ দফা সুপারিশও করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে, পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
এবং রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়কপথে চাপ কমাতে হবে, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।