নওগাঁ প্রতিনিধি // খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে এবং এই কার্যক্রম ৩ মাস ধরে চলমান থাকবে।’
একটি মহল সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই চালের মূল্য নিয়ে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের সব অপতৎপরতা নস্যাৎ করে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনবান্ধব সরকার সবার প্রয়োজনে সব কিছুই করে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নওগাঁয় সার্কিট হাউসে সারাদেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং টিসিবিরকার্ড হোল্ডারদের মধ্যে চাল ও আটা বিতরণ উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নিদের্শেই আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব এবং টিসিবির কার্ডহোল্ডারদের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে।’
‘দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি হঠাৎ করে বাজারে চালের মূল্য কেজি প্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোক্তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করেই সারাদেশে মানবিক এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ যেন একাধিক বার চাল নিতে না পারে সেজন্য টিসিবির কার্ডধারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রতি কার্ডধারীকে মাসে ৫ কেজি করে দুইবার চাল দেওয়া হবে। এ ছাড়াও কার্ডধারী ছাড়া যারা চাল নিতে যাবে তাদেরকে ভোটার আইডিকার্ডের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে।
সেটার উপর তারিখ ও সিল দেওয়া থাকবে। অপরদিকে ঢাকা মহানগরে ৫০টি ট্রাকে উন্মুক্তভাবে চাল বিক্রি করা হবে। এই কর্মসূচিতে প্রতিদিন প্রত্যেকটি ট্রাকে ২ মেট্রিক টন করে চাল ওএমএস-এর আওতায় বিক্রি করা হবে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘খাদ্য বান্ধবের ক্ষেত্রে ডিভাইস তৈরি করে আমরা স্মার্ট কার্ড তৈরি করছি। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পুরোপুরি কাজ শেষ হয়ে গেলে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে, এতে করে কেউ অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।
ইতোপূর্বে সারাদেশে ৮১৩টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ১ মেট্রিক টন করে চাল সরবরাহ করা হতো। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ২ মেট্রিক টন করে চাল সরবরাহ করা হবে। এসব কেন্দ্রে টিসিবির কার্ডহোল্ডারদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ শতভাগ। দেশে চালের কোনো অভাব নেই। দেশে বর্তমানে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ রয়েছে। খাদ্যশষ্য সংগ্রহ অভিযানের আরও দু’দিন বাকি রয়েছে।
অর্থাৎ এ দু’দিনে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সংগৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চালের বাজার কমতে শুরু করেছে। ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব চালু হলে চালের দাম আরও কমবে এবং সামনে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পায় সেটা নিয়েও কাজ করছি আমরা।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে চালের অর্ডার দিয়েছি সবগুলোই আসবে বলে আশা করি না। যার কারণে আমরা বেশি করে চালের অর্ডার দেই। দেশে মোটা চাল আসে না।
চিকন চালই সাধারণত আসে। আমদানি শুল্ক যখন ২৫ শতাংশ ছিল তখন ৫০ মেট্রিক টন চাল দেশে এসেছে। অথচ অর্ডার দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের এমপি ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, খাদ্যমন্ত্রীর একান্ত (উপসচিব) সচিব মো. শহিদুজ্জামান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবিরসহ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply