অভিযানের প্রথম দিনে বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাগজপত্র বিহীন দুটি সিটি স্ক্যান সেন্টারসহ তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
এছাড়া একটি প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। তবে বন্ধ করে দেওয়া তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকেও পাঁচ হাজার টাকা করে সর্বোমোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযানে উপস্থিত থাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু রিয়াদ।
বন্ধ করে দেওয়া অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হলো- রয়েল সিটি সেন্টার, বরিশাল সিটি সেন্টার এবং সাইন্স ল্যাব। এছাড়া জরিমানা দেওয়া অপর প্রতিষ্ঠানের নাম সুলতানা ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খান জানান, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা অভিযান শুরু করেছি। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় প্রায় আটশর মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। আমরা বরিশাল নগরীতে অভিযান করছি। এছাড়া জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছেন।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের মোট পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এর মধ্যে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্র সঠিক থাকায় সেটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে একই প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েল সিটি স্ক্যান নামের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোন কাগজপত্রই নেই।
তিনি বলেন, ‘বরিশাল সিটি সেন্টার নামের যে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেটির লাইসেন্স আছে ‘সি’ ক্যাটাগরির। কিন্তু সেখানে সিটি স্ক্যান করা হয়। সিটি স্ক্যানের জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স থাকতে হবে। সেটা দেখাতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বরিশাল সিটি সেন্টারে অভিযানকালে দেখা গেছে, ‘হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে সিটি স্ক্যান করার জন্য বরিশাল সিটি সেন্টারে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসক। স্লিপে চিকিৎসকের সিল এবং সই রয়েছে। এটা অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
অপরদিকে, সুলতানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ‘সি’ ক্যাটাগরির হলেও সেখানে হরমল টেস্ট করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী হরমন পরীক্ষার জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স থাকতে হবে। সেটা না থাকায় সুলতানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের পূর্ব পাশে সাইন্স ল্যাব নামক ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির কোন কাগজপত্রই নেই। সে কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, ‘যেসব তিনটি প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে চাবি নিয়ে আসা হয়েছে। এগুলো পুনরায় চালু করতে হলে আগে স্বাস্থ্য বিভাগের যথাযথ লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া চলমান এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
Leave a Reply