মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদাদাতা // যাদের আহ্বানে সাড়াদিয়ে আমরা কল্যাণের পথে রব্বুল আলামিনের দরবারে হাজিরা দিই। আমাদের যারা (মুয়াজ্জিন) ডেকে আনেন মসজিদে কেমন আছেন তারা। দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধির লাগামহীন ছুটাছুটিতে সাধারন মানুষ যখন দিশেহারা সেখানে মাসে মাত্র ৫০০০-৬০০০ টাকা বেতনে কাজ করা এই ইমামরা তাদের জীবন কিভাবে অতিবাহিত করছেন। সরজমিনে জানা যায়, রামগঞ্জে ইমামদের বিশেষ করে গ্রামের ইমামদের বেতন ৪০০০-৫০০০ টাকা আর মুয়াজ্জিনের বেতন ২০০০-৩০০০টাকা। গ্রামে অনেক সময় দেখা যায় ইমাম এবং মুয়াজ্জিনের কাজ একই ব্যাক্তি করছে।
রামগঞ্জ উপজেলাতে কয়েকটি মসজিদে ঘুরে ইমাম ও মুয়াজিনের সাথে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধিতে আমারা অনেক কষ্ঠে আছি। দিন দিন যেভাবে সককিছুর দাম বাড়ছে জানিনা আমরা কিভাবে জীবন যাপন করব। সব কিছুর দাম বাড়লেও আমাদের বেতন তো আর বাড়ছে না। আমরা ইমাম সবার নেতা কিন্তু এই নেতার খোজ কেউ রাখে না। বিভিন্ন সময় সরকার অনুদান দেয় কিন্তু আমাদের ইমামদের কেউ যাহায্য করে না। এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বররা মসজিদে নামাজ আদায় করে তারা চাইলে একজন ইমাম বা মুয়াজ্জিনকে একটি চালের কার্ড করে দিতে পারে কিন্তু দেয় না। লজ্জায় এই ইমাম, মুয়াজ্জিনরা না খেয়ে থাকলেও কারো কাছে বলতে পারে না। আমরা যারা মসজিদে চাকরি করি আমাদের বেতন অনেক কম। একজন দিনমজুরের ইনকামও আমাদের থেকে অনেক বেশি। সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধাও আমরা পাই না। যাদের চলার সামর্থ্য নাই তারা মসজিদেই থাকে। অনেকে টিউশনি করে কিছু আয় করে। একজন খাদেমের বেতন দেয়া হয় ৬-৭ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে কোনোভাবেই সংসার চলে না। আমরা মেসে খাওয়া-দাওয়া করলেই মাসে ৪ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। বাকি টাকা দিয়ে কোনোভাবেই পরিবার নিয়ে চলা যায় না। আর এখন নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেশি। এতে আমাদের আরও বেশি কষ্ট করতে হয়। সবাই মাছ-মাংস খায় আমারা তা খাই না। আলু-ডাল দিয়েই ভাত খেতে হয়। সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। এজন্য আমাদের উপরেও প্রভাব পড়েছে। তারা ভালো চলতে না পারলে মসজিদেরও আয় কমে যায়। আমাদেরও বেতন দেয়া কষ্ট হয়। মুসল্লিরা ভালো না থাকলে তো আমরাও ভালো থাকতে পারি না।
তারা আরও বলেন সবার চাকুরির নির্দিষ্ট সময় আছে কিন্ত ইমাম, মুয়াজ্জিনের নির্দিষ্ট সময় নেই অথচ তারা যে সম্মানী পায় সেটা অতি নগণ্য। তাই আমি মনে করি প্রতিটি মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে নজর দেওয়া যে, তার মসজিদের খাদেমরা কেমন আছে, তাদের কোন কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা। দেশে যেকোন প্রতিষ্টান চালাতে সরকারের নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে কিন্তু‘ মসজিদ পরিচালনার জন্য কোন গাইডলাইন নেই। এখানে যারা ইমামতি বা মুয়াজ্জিন এর কাজ করে তাদের সম্মানীর ব্যাপারে সরকারের কোন নির্দিষ্ট কাঠামো নেই। সামান্য বেতনে কিভাবে তারা তাদের জীবন অতিবাহিত করে কেউ তাদের খোজ খবর রাখে না। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, অতি দ্রুত সকল মুসলমানদের নেতা ইমামদের বিষয়ে নির্দিষ্ট একটি বেতন কাঠামো নির্ধারন করা হয়।
Leave a Reply