মোসাম্মৎ সালমা বেগম বলেন, এখানকার পুলিশ কর্মকর্তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে। এমনটা হতে পারে তা কল্পনায়ও ছিল না।
সালমা বেগমের কল্পনাকে হার মানিয়ে যুগান্তকারী পুলিশিং সেবা দিতে শুরু করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। কমিশনার সাইফুল ইসলামের চেষ্টায় শুরু হওয়া ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিসের প্রথম দিনের (০৫ আগস্ট) সেবাগ্রহীতা তিনি। একই দিন আরও দুইজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তুলে দিয়েছেন বিএমপি কমিশনার। দেওয়া হবে আরও ৩০ জনকে।
এর মধ্যে ছেলের জন্য সার্টিফিকেট নিতে এসেছেন বাংলাবাজারের বাসিন্দা মানছুরা হক। তিনি বলেন, ২০২১ সালেও আমি ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়েছিলাম। তখন অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। সরকার নির্ধারিত টাকার কয়েকগুণ বেশি খরচ করে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে। এবারের পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ আলাদা এবং সুন্দর। এত অল্প সময়ের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়া যায়, এটি স্বপ্নের মতো ছিল আমার কাছে। এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও যেন চালু থাকে এই কামনা করি।
পূর্ব রহমতপুরের বাসিন্দা সাইফুল খান যাবেন সৌদি আরব। মাত্র তিন দিনে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেয়ে বলেন, পুলিশের প্রতি আমার এক ধরনের আস্থা তৈরি হয়েছে। মাত্র পাঁচশ টাকায় পুরো কাজ শেষ হয়েছে। অথচ এর আগে আমাদের থানায় যেতে হতো। পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিতে হতো। পুলিশ কমিশনারের এই উদ্যোগ বিদেশগামীদের জন্য এক কথায় অনবদ্য।
পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, শুধু তিনটি নয়, ইতোমধ্যে আবেদন করা আরও ৩০টি ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলোও ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সেবাপ্রত্যাশীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, শুরুর দিন আমরা তিনজনের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করেছিলাম। সেই তিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে আবেদন করা ৩০ জনের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলোও আজকের মধ্যে তাদের হাতে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আমি সময় নিয়েছিলাম ৭ দিন। কিন্তু তিন দিনে সেগুলোর দাপ্তরিক সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমার ইচ্ছা ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন যারা করবেন, তাদের ক্লিয়ারেন্স হয়ে গেলে তাদের আসতে হবে না, আমরাই তাদের কাছে পৌঁছে দেবো এই সার্টিফিকেট।
অন্য সময়ে ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রার্থীকে দালাল ধরতে হতো, কম্পিউটারের দোকানে অর্থ ব্যয় করতে হতো। আমি চেয়েছি এই ভোগান্তি লাঘব হোক। এখন সরকারি নির্ধারিত যে ফি রয়েছে, সেই ফি পরিশোধ করে আবেদন করে গেলে আমাদের পুলিশ সদস্যরা তার বিষয়ে তদন্তে করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আবেদনকারী জানবেনও না কে তদন্ত করেছেন। সুতরাং ভোগান্তিরও কোনো সুযোগ থাকছে না।
প্রসঙ্গত, ৩১ আগস্ট ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিস চালু করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।
Leave a Reply