মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি।।
মেহেন্দিগঞ্জে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সৎ মাকে মারধর করে পিতাকে দিয়ে জোড়পুর্বক তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন সন্তানেরা। আঘাতের যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন ৭৫ বছরের অসহায় বৃদ্ধা আমিনা খাতুন। গত রোববার (৯মার্চ) চরএককরিয়া ইউনিয়নের ইয়ারবেগ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আহত মা আমিনা খাতুন বলেন, তিনি চরএককরিয়া ইউনিয়নের ইয়ারবেগ ওয়ার্ডের আঃ মন্নান বেপারির স্ত্রী। তার আগের স্বামী মারা যাওয়ার পরে গত ১০ বছর পুর্বে আঃ মন্নান বেপারির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। নিজে বৃদ্ধা হয়েও অসুস্থ বৃদ্ধ স্বামীর নিয়মিত খেদমত করতেন আমিনা খাতুন। অসুস্থ স্বামীর প্রায় কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। সে সম্পদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করার নানা চক্রান্ত করতে থাকেন সৎ সন্তানেরা। যেকোনো সময় স্বামী মারা যেতে পারে। তার মৃত্যুতে আমি দোআনি সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবো। তাই কোটি টাকার সম্পত্তির ওয়ারিশ যেন না হতে পারি তাই আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে তাদের পিতাকে দিয়ে জোড়পুর্বক ডির্ভোস দিয়ে বাড়িতে থেকে তাড়িয়ে দেয় সৎ মেয়ে জিয়াসমিন বেগম। তাকে ডির্ভোস দিলেও কাবিনের টাকা আর ভরণপোষণের টাকা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
স্বামী আঃ মন্নান বেপারি বলেন, প্রায় ১৯ বছর পূর্বে প্রথম স্ত্রী ৭ ছেলে এক মেয়ে রেখে মারা যায়। এরপর খেদমত এর জন্য আমিনা খাতুনকে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। শরীরে কাপড় আর পেটে ভাত এমন কন্ডিশনে তাকে বিয়ে করা হয়েছে। নিয়মিত সেবা যত্ন করতে চান না স্ত্রী আমিনা খাতুন। সেবা যত্ন করতে গিয়ে কিছু সম্পদ তার নামে লিখে দিতে বলে। আমি বলেছি আমার মৃত্যুর পর তুমি সম্পত্তির ওয়ারিশ হইবা। এও বলেন তাকে আমি মারধর করিনি আমার মেয়ে তাকে মারধর করা ঠিক হয়নি।
অভিযুক্ত মেয়ে জিয়াসমিন বেগম বলেন, সৎ মা খেদমত করতে গিয়ে বাবার কাছে জমি দাবি করায় তাকে মারধর করেছি এবং বাবাকে বলে তাকে ডির্ভোস দেওয়ানো হয়েছে। তিনি আমাদের হাতে-পায়ে ধরে অভাবের তাড়নায় আমার বাবার কাছে বিয়ে বসছে। তাকে বাবা নগদ ২০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছে। বিয়ের সময় সেই দেনমোহর তার হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও সৎ মা আমার নামে বাবার কাছে বদনাম বলে।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধা আমিনা খাতুন এর ভাই নজির সিকদার বলেন, জায়গা জমি পাবে বলে বোনকে মারধর করে ডির্ভোস দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। বোন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। আমি গরিব মানুষ তাকে পেটে খাওয়াবো না ঔষধ কিনে খাওয়াবো। আমি অক্ষম আমার স্ত্রী মারা গেছে। আমি ছেলেদের সাথে কোন রকম থাকি।
কাজী মোঃ ইলিয়াস বলেন, আমাকে ফোন দিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়েছে বৃদ্ধ মন্নান বেপারির সন্তানেরা। আমার সামনে তার পিতাকে বলেছে বাবা তুমি সৎ মাকে ডির্ভোস দেও। সন্তানের কথায় বৃদ্ধ তালাক দিতে রাজি হয়ে যায়। তবে তালাক এখনি কার্যকর হয়নি। তা কার্যকর হতে তিন মাস সময় লাগবে। আর কাবিনের টাকা আর ভরনপোষণের টাকা আগে দিয়ে দিয়েছে শুনেছি।
মেহেন্দিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেনি তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।