নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ১৫ বছরে ভোটাধিকার হত্যা করেছে স্বৈরাচারি পতিত সরকার আওয়ামী লীগ, হয়নি সুষ্ঠু কোন নির্বাচন, ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ। তিনি বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপি’র ১ নং সদস্যও।
গতকাল শনিবার ( ২৫ জানুয়ারি) বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নে গুচ্ছগ্রাম উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রথমে শেখ মুজিব ও পরে তার মেয়ে হাসিনা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে খুনের দেশে পরিণত করে। মানুষের বাকস্বাধীনতাকে হরণ করে।
তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়। এরপর ফিরিয়ে আনা হলো শেখ মুজিবর রহমানকে। তিনি এসে স্বাধীনতা রক্ষার পরিবর্তে কন্ঠ চেপে ধরলেন সাধারণ মানুষের। তার ঘড়ানার ৪ টি পত্রিকা বাদে সব জাতীয় ও স্থানীয় সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। বাকস্বাধীনতা হরণ করে শেখ মুজিব। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ছিল বাকস্বাধীনতা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্ত শেখ মুজিবের শাসনামলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পতিত হয় দেশ। বাংলাদেশকে ভিখারীর দেশে পরিণত করেছিল শেখ মুজিব। দীর্ঘ ৩ বছর অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটাতে হয়েছে মানুষদের।
এর প্রতিবাদ যাতে কেউ না করতে পারে এজন্য গঠন করলেন বাকশাল। ধর্মীয় সহ সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তিনি। এরপর বাকশালে আজীবন শেখ মুজিব দেশ পরিচালনা করবেন বলে অবৈধ ও জোর করে আইন পাশ করেন। ফুসে ওঠে দেশের মানুষ। ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক পট পরিবর্তনের পর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মাত্র ৩ মাসের মাথায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন হয় দেশ। দূর হয়ে যায় দুর্ভিক্ষ। জিয়াউর রহমানের দেশ প্রেম, সততা, গণতন্ত্র প্রেমের কাছে বার বার পরাজিত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। যেখানেই শেখ মুজিবর রহমান ব্যর্থ হয়েছে সেখানেই জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন।
এরপর হাসিনা ক্ষমতায় এসে দীর্ঘ ১৭ বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে ছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করে। ভোটের অধিকার ক্ষুন্ন করে।
এই স্বৈরাচারী সরকার বাংলাদেশে আর যাতে না আসতে পারে এজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
নাসের বলেন, বিগত ১৫ বছর একসাথে কোন সভা সমাবেশ করতে দেয়নি আওয়ামী লীগ। ইফতার পার্টি করলে তার সরঞ্জামাধি নিয়ে যাওয়া হতো। পুলিশ দিয়ে হয়রানী করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে জেলে রাখা হয়েছিল। তাকে দেশত্যাগ করে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্ত দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি যাননি। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। তার সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান যাতে দেশে আসতে না পারেন এজন্য ২১টি মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেয়া হয়েছিল।
নাসের বলেন, শেখ হাসিনা মনে করেছিলেন বাবার মত আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। কিন্ত স্বৈরাচারী দলের পতন হয়েছে। আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষ দেশকে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করেছেন। কিন্ত এখনও দোসররা দেশের ক্ষতিসাধনে পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থেকে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণতের স্বপ্ন বুনছেন। তার নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে নিরাপদ ও উন্নত রাষ্ট্র। যেখানে শিক্ষা, চিকিৎসা স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ হবে। রাষ্ট্র মেরামতে এজন্য ৩১ দফার কর্মসুচী হাতে নিয়েছেন তিনি।
ভোটের অধিকার পেলে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করণে যাকেই ধানের শীষের প্রতীক দেয়া হবে তাকে বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বস্তরের মানুষকে পাশে থাকার আহবান জানান আবু নাসের।
সদর উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রুবেল হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসুচীতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলদের সাবেক সভাপতি হেমায়েত হোসেন, চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি সেকান্দার, সাবেক সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সহ-সভাপতি কবির হোসেন মৃধা , শ্রমিকদলের রাজিব, শহিদুল , নিরবসহ অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।