নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। তবে সেতুটির এক পাশে কাঁচা রাস্তা, আরেক পাশে বিল। তাই বর্ষাকালে সেতুতে ওঠানামায় চড়তে হয় নৌকায়।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের নোমোরহাট গ্রামে নির্মিত এ সেতুতে লাঘব হয়নি দুর্ভোগ। সেতুর দুই পাশে দ্রুত সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী। চাঁদপাশা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম নোমোরহাটের আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন খালে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আয়রন সেতুটি। এর এক পাশে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের চরআইচা গ্রাম।
দুই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সেতুটি নির্মাণ করেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, বাবুগঞ্জ প্রান্ত থেকে সেতুতে ওঠার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এবড়োখেবড়ো এ রাস্তায় হাঁটা গেলেও তা যানবহন চলাচলের উপযোগী নয়।
সেখান থেকে সেতু পার হয়ে অপর প্রান্তে পৌঁছার পর আর সড়ক নেই। প্রায় আধা কিলোমিটার বিল পেরিয়ে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের চরআইচা গ্রামের পাকা সড়কে উঠতে হয়। স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে গ্রামের লোকজন বিলের ভেতর দিয়ে হাঁটেন। বর্ষা মৌসুমে নৌকায় বিল পেরিয়ে সেতুতে ওঠানামা করতে হয়।
স্থানীয় যুবক হৃদয় জানান, যে খালের ওপর দিয়ে সেতুটি নির্মিত হয়েছে, সেটি এক সময়ের প্রমত্ত আড়িয়াল খাঁ নদের একটি শাখা। চর পড়ে সেটি ছোট খালে পরিণত হয়েছে। সেতু নির্মাণের আগে গ্রামের লোকজন ১০ টাকা খেয়া ভাড়ায় এপার-ওপার যাতায়াত করতেন।
চাঁদপাশা ইউনিয়নের সন্তান যুগ্ম সচিব মো. বজলুর রশিদের চেষ্টায় এলজিইডি এক বছর আগে সেখানে সেতু নির্মাণ করেছে। তবে সেতু হলেও সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। চাঁদপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান সবুজ জানান, তাঁর মেয়াদকালীন এলজিইডি সেতুটি নির্মাণ করেছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পরে ব্যয় আরও বাড়ানো হয়। তিনি বলেন, সেতুতে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য কাজ চলছে। শিগগির সড়ক নির্মাণ করা হবে।
চাঁদপাশার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. মামুন বলেন, সেতুর চাঁদপাশার অংশে ১৬ ফুট প্রশস্ত মাটির সড়ক নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে মাটির সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হবে।
এই ইউপি সদস্য জানান, বিল প্রান্তে চাঁদপাশার সীমানা শেষে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ২০০ ফুট পেরিয়ে পাকা সড়কে উঠতে হবে। তবে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ ওই অংশে সড়ক নির্মাণ না করলে জনগণের দুর্ভোগ রয়েই যাবে।
এ প্রসঙ্গে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলেন, দুই বছর ধরে তাঁরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অপ্রতুল বরাদ্দ পাচ্ছেন। তার পরও তাঁদের ২০০ মিটার অংশে আপাতত কাঁচা সড়ক নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
Leave a Reply